
বাংলাদেশে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার। সম্প্রতি জনপ্রিয় ক্রীড়া ওয়েবসাইট ক্রিকইনফো ডট কমের মাধ্যমে অনলাইন জুয়ার প্রচার ব্যাপক হারে বাড়ার বিষয়টি নজরে এসেছে সরকারের। এ নিয়ে সাইবার নিরাপত্তা ইউনিট ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো ইতোমধ্যে নজরদারি শুরু করেছে।
টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব জানিয়েছেন, এককভাবে বাংলাদেশের সাইবার স্পেসে সবচেয়ে বেশি জুয়ার বিজ্ঞাপন দেয় ক্রিকইনফো, যা দেশের আইন লঙ্ঘন করছে। এ পরিস্থিতিতে ওয়েবসাইটটি ব্লক করার বিষয়ে সরকার সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) দিবাগত রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন, ‘অনলাইন জুয়া, এর প্রচার-প্রচারণা ও বিজ্ঞাপন ইত্যাদি বাংলাদেশের সাইবার সুরক্ষা আইন ২০২৫ অনুযায়ী নিষিদ্ধ। জুয়ার কালো থাবায় বাংলাদেশের যুবকরা সর্বস্বান্ত হচ্ছে, পাচার হয়ে যাচ্ছে দেশের সম্পদ।’
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডসহ বেশ কিছু ক্রিকেট প্লেইং দেশের ক্রিকইনফো অ্যাডভার্টাইজমেন্ট স্টাডি করে দেখেছি— সেখানে অনলাইন জুয়ার বিজ্ঞাপন শতভাগ অনুপস্থিত।’
তিনি আরও জানান, জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি (এনসিএসএ) ইতোমধ্যে ক্রিকইনফোকে এ বিষয়ে একটি ই-মেইল পাঠিয়েছে এবং পরবর্তীতে তাদের কাছে ডাকযোগে রেজিস্টার্ড চিঠি পাঠানো হবে।
পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, ‘একদিকে অবৈধভাবে জুয়ার বিজ্ঞাপন দিয়ে আইন ভঙ্গ করছে ক্রিকইনফো, অন্যদিকে জুয়ার বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের ওপর আয়কর কিংবা ভ্যাট হিসেবে বাংলাদেশকে কোনো অর্থ দেয়নি, আইন পাসের আগে বা পরে।’
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধ না করলে বাংলাদেশে ক্রিকইনফো ব্লক করার বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত হবে কি না এই বিষয়ে জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি জনমত সংগ্রহ করবে।’
এর আগে অনলাইন জুয়া বন্ধের গত মে মাসে ১ হাজারের বেশি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে।
জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সির বরাতে জানা গেছে, সাইবার স্পেসে জুয়া খেলা সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ এবং এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে সরকার। সদ্য জারি করা সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর ২০ ধারা অনুযায়ী সাইবার জুয়া সংক্রান্ত যেকোনো কার্যক্রম আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
এ ধারায় বলা হয়েছে, জুয়া খেলা, খেলার জন্য অ্যাপ/পোর্টাল/ডিভাইস তৈরি বা পরিচালনা, খেলায় সহায়তা বা উৎসাহ প্রদান, বিজ্ঞাপনে অংশগ্রহণ এবং সরাসরি বা পরোক্ষভাবে প্রচার-প্রচারণা চালানো আইন লঙ্ঘন হিসেবে গণ্য হবে। একই অধ্যাদেশের ২১ এবং ২২ ধারায় জুয়া সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেন, প্রতারণা এবং জালিয়াতিকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
Comments