
প্রথম পাঁচ ম্যাচে নিজের জাত চেনাতে ব্যর্থ হওয়া আভিশেক শার্মা অবশেষে রানের দেখা পেলেন। তার খুনে ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি করে একটি আক্ষেপ ঘোচালেন ভারতীয় ব্যাটসম্যান। রান তাড়ায় দুর্দান্ত এক জয় পেল তার দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।
শনিবার রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে ২৪৫ রানের পাহাড় গড়েছিল পাঞ্জাব। কিন্তু পাহাড়েও লাভ হয়নি। অভিষেক শর্মার ৫৫ বলে ১৪১ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে ভর করে হায়দরাবাদ সে পাহাড় টপকে গেছে ইনিংসের ৮ উইকেট আর ৯ বল হাতে রেখে। আইপিএল ইতিহাসে এর চেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড আছেই মাত্র আর একটা।
অবশ্য রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামটা পাঞ্জাবের জন্য অপয়া বলা যায়! এ ভেন্যুতে এ নিয়ে সর্বশেষ ৮ ম্যাচেই হারল প্রীতি জিনতার দল। শনিবার পাঞ্জাব ২৪৫ রান করার পর মনে হয়েছিল, এবার হয়তো ভিন্ন কিছু হতে পারে। কিন্তু রান তাড়ায় নেমে হায়দরাবাদের হায়দরাবাদের দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড আর অভিষেক শর্মা যেভাবে ব্যাটিং করতে থাকেন, পাশার দান উল্টে তখন মতে থাকে, হায়দরাবাদ ম্যাচটা ১০ উইকেটেই না জিতে যায়!
২৮ রানে থাকতে অভিষেক একবার ক্যাচ দিয়েছিলেন বটে, কিন্তু ইয়াশ ঠাকুরের সে বলটা নো হওয়ায় সে যাত্রায় বেঁচে যান বাঁহাতি এ তরুণ ওপেনার। নতুন জীবন পেয়েই এবারের আইপিএলে প্রথম ছক্কা অভিষেকের, এরপর আরও ৯ বার বল উড়িয়ে পাঠিয়েছেন সীমানার অন্যপ্রান্তে। সঙ্গে ১৪টি চারও ছিল। শুধু চার-ছক্কা থেকেই এসেছে তাঁর ১১৬ রান।
জীবন পাওয়ার পর পাঞ্জাবের বোলারদের কচুকাটা করতে থাকেন অভিষেক। ১৯ বলে তাঁর ফিফটির পাশে হেডের মতো ব্যাটসম্যানকেও ম্লান লাগছিল। দুজনের জুটিতে ৮ম ওভারেই ১০০ পেরিয়ে যায় হায়দরাবাদ, আর দেড়শর ঘরে পৌঁছায় ১১ ওভারেই। ৩১ বলে ফিফটি করেছেন হেড। মাঝে অভিষেককে দ্বিতীয় জীবন দেন চাহাল।
দলকে ১৭১ রানে রেখে চাহালের বলে ম্যাক্সওয়েলের হাতে ক্যাচ দেন হেড (৩৭ বলে ৯ চার ৩ ছক্কায় ৬৬ রান)। অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান ফিরে যাওয়ার ওভারেই সেঞ্চুরি আদায় করেছেন অভিষেক। ১৯ বলে ফিফটি ছোঁয়া ভারতীয় ব্যাটসম্যান তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন ৪০ বলে। ২৪৫ তাড়া করতে নামা হায়দরাবাদের স্কোর তখন ১৩ ওভার শেষে ১৭৫।
দেড় শ-র পথে ভালোভাবেই ছিলেন অভিষেক। তবে জয় থেকে মোটে ২৪ রান দূরে থাকতে ড্রেসিংরুমের পথ ধরতে হয় বাঁহাতি এ ওপেনারকে। অভিষেক যখন ড্রেসিংরুমে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁর নামের পাশে ৫৫ বলে ১৪ চার ও ১০ ছক্কায় ১৪১ রান! আইপিএল ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এটি। আর ভারতীয়দের মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ।
অভিষেক আউট হওয়ার পরে বাকি কাজটুকু সেরেছেন হেনরিখ ক্লাসেন (১৪ বলে ২১*) ও ইশান কিশান (৬ বলে ৯*)।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার প্রিয়াংশ আরিয়া ও প্রভসিমরন সিংহের উদ্বোধনী জুটিতে মাত্র ৪ ওভারেই ৬৬ রান পায় পাঞ্জাব। ১৩ বলে ৩৬ রান করা আরিয়াকে ফিরিয়ে জুটি সেখানেই ভেঙে দেন হারশাল প্যাটেল। আরেক ওপেনার প্রভসিমরন সিং আউট হয়েছেন ২৩ বলে ৪২ রান করে।
তবে পাঞ্জাবের স্কোর আড়াই-শর কাছাকাছি নিতে বড় অবদান রাখেন শ্রেয়াস আইয়ার। পাঞ্জাব অধিনায়ক মাত্র ৩৬ বলে ৬ চার ও ৬ ছক্কায় ৮২ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। আর শেষ দিকে ১১ বলে ১ চার ও ৪ ছক্কায় স্কোরবোর্ডে ৩৪* রান যোগ করেন স্টয়নিস।
তবে পাঞ্জাবের সব চেষ্টা বৃথা যায় অভিষেকের তাণ্ডবের কাছে।
Comments