আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক লিওনেল মেসির ভারত সফর ঘিরে ভক্তদের উন্মাদনা ছিল আকাশছোঁয়া। কিন্তু ‘জিওএটি ইন্ডিয়া ট্যুর’ নামে পরিচিত এই তিন দিনের জমকালো আয়োজন শেষ পর্যন্ত চরম বিশৃঙ্খলা, হট্টগোল এবং অব্যবস্থাপনার নজির হয়ে রইল। বিশেষ করে কলকাতার সল্টলেক স্টেডিয়ামের ঘটনা আয়োজকদের পেশাদারিত্ব নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
সফরের শুরুতেই সল্টলেক স্টেডিয়ামে দেখা দেয় নজিরবিহীন অব্যবস্থাপনা। ভিআইপি ও সাধারণ দর্শকদের ভিড় সামলাতে ব্যর্থ হয় নিরাপত্তা কর্মীরা। একপর্যায়ে প্রায় ৮০ জন মানুষ মেসিকে ঘিরে ধরেন, যা বড় ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করে। এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে মেসি দৃশ্যত অস্বস্তি বোধ করেন। পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী মাঠে এক ঘণ্টা থাকার কথা থাকলেও, পরিস্থিতির কারণে মাত্র ২২ মিনিট অবস্থান করেই তিনি মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন।
মেসির এই সফরকে কেন্দ্র করে বড় অঙ্কের আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির সাবেক সাংসদ অর্জুন সিং। তিনি এই পুরো আয়োজনকে ‘চুরি’ বলে আখ্যায়িত করেন। তার দাবি, মেসির আবেগকে পুঁজি করে ভারতে প্রায় ১০০ কোটি টাকার ব্যবসা ফেঁদে বসা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, স্টেডিয়ামে সাধারণ দর্শকদের কাছে পানির বোতল ১৫০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে, যা শোষণের শামিল। অর্জুন সিং এই অনিয়মের বিরুদ্ধে ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
টিকিট কেটেও হাজারো দর্শক মেসিকে ঠিকমতো দেখতে না পাওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন। গ্যালারি থেকে মাঠে পানির বোতল ছুড়ে মারা হয়। পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে উত্তেজিত জনতা গ্যালারির রেলিংয়ের তালা ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়ে। এমনকি স্টেডিয়ামের আসবাবপত্র লুটপাটের ঘটনাও ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়।
কলকাতার এই ঘটনায় রাজ্যের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বার্তা দিয়ে লিওনেল মেসির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। আনন্দ ও উদযাপনের উপলক্ষ হিসেবে শুরু হওয়া এই সফর শেষ পর্যন্ত বিতর্ক এবং রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।




Comments