Image description

অন্তর্বর্তী সরকারের পুলিশ বাহিনীতে সংস্কারে গঠিত কমিশন পুলিশে নিয়োগের ক্ষেত্রে বেশ কিছু পরিবর্তনের সুপারিশ করতে যাচ্ছে। কমিশনের খসড়া সুপারিশে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ও কনস্টেবল নিয়োগ ছাড়া আর কোনো নিয়োগ না করতে বলা হচ্ছে। এর ফলে কনস্টেবল থেকে বিভাগীয় পরীক্ষা দিয়ে একজন এএসআই, এসআই হয়ে ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি পাবেন। এ ক্ষেত্রে কনস্টেবল নিয়োগে শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির পরিবর্তে এইচএসসি করারও চিন্তাভাবনা চলছে বলে কমিশনের একটি সূত্র জানিয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ সার্জেন্ট নিয়োগের ক্ষেত্রেও পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করা হচ্ছে।

কমিশনের একটি সূত্র জানায়, রাজনীতি ও দুর্নীতির বেড়াজাল থেকে পুলিশ বাহিনীকে রক্ষা করতে নিয়োগে এসব পরিবর্তনের সুপারিশ করা হচ্ছে। সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ও কনস্টেবল নিয়োগ ছাড়া অন্য নিয়োগ বন্ধ হলে সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) নিয়োগ না করলেও চলবে। উল্লেখ্য, বর্তমানে চলমান এসআই নিয়োগ প্রক্রিয়াতে এ সুপারিশ বাধা হবে না।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশ বাহিনীতে সংস্কারে উদ্যোগ নেয়। গঠন করা হয় সংস্কার কমিশন। ওই কমিশন কয়েক দফা বৈঠক করেছে। তাছাড়া পুলিশ সদর দপ্তরও ৩৯টি বিষয়ে প্রস্তাবনা দিয়েছে কমিশনের কাছে। তবে কমিশনের সুপারিশগুলো আমলে নেওয়া হবে কি না, তা নির্ভর করবে সরকারের ওপর। আগামী ৩১ ডিসেম্বর সংস্কার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।

পুলিশের একটি সূত্র জানায়, খসড়া সুপারিশে মারণাস্ত্র হিসেবে পরিচিত চায়নিজ রাইফেল ব্যবহার করতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। তবে আন্দোলন বা বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে পুলিশ টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেডসহ অন্য সরঞ্জামাদি ব্যবহার করতে পারবে। এ ছাড়া হুটহাট গুলি করা যাবে না ও নিরপরাধ কাউকে আটক করা যাবে না। জনবান্ধব পুলিশ গড়ে তুলতে হবে। ব্রিটিশ আমলের আইনের ধারাগুলো পরিবর্তন করার উদ্যোগ থাকবে। একই সঙ্গে স্বাধীন পুলিশ কমিশন গঠনের একাধিক সুপারিশ করছে কমিশন। পুলিশ কমিশনের প্রধান থাকবেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)। 

সংস্কার কমিশনের কয়েকজন সদস্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, কর্মসময় আট ঘণ্টা করার সুপারিশ করা হচ্ছে। বাতিল হবে না ‘পুলিশ নিবারণ আইন’। পুলিশ হেফাজতে কোনো ঘটনা ঘটলে তার দায় নিতে হবে পুলিশকেই। এ ছাড়া এসপি-ডিআইজি নিয়োগে কোনো এমপি-মন্ত্রীদের চাহিদাপত্র (ডিও লেটার) বন্ধ করার প্রস্তাব ও রাজনৈতিক তদবির হলেই পদোন্নতি বাতিল করা সুপারিশ করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে পুলিশের সংস্কার কমিশনের প্রধান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব সফর রাজ হোসেন বলেন, ‘কমিশনের কাজ শুরু হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ই প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে। জনবান্ধব পুলিশ গঠন করতে যা যা করা দরকার সেই সুপারিশ করা হবে। সবার মতামত নিয়ে পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাবনা তৈরি করার চেষ্টা চলছে। পুলিশ সদর দপ্তরের প্রস্তাবনাগুলোও আমরা পর্যালোচনা করছি। পুলিশও চাচ্ছে জনবান্ধব পুলিশ গঠন করতে।’