
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বাড়িভাড়া বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবিতে টানা আটদিন ধরে আন্দোলন চালাচ্ছেন। গত ১৭ অক্টোবর দুপুর ২টা থেকে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমরণ অনশন শুরু করেন, যা এখন পর্যন্ত প্রায় ৪২ ঘণ্টা চলেছে। অনশনে অংশ নেওয়া কিছু শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
রোববার (১৯ অক্টোবর) ভোরে এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ ও তাসনিম জারা শহীদ মিনারে গিয়ে শিক্ষকদের খোঁজ-খবর নেন। তারা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী ফেসবুকে এ বিষয়টি জানিয়েছেন।
অধ্যক্ষ আজিজী জানান, আজ শিক্ষকরা শিক্ষা ভবন অভিমুখে ‘ভূখা মিছিল’ আয়োজন করবেন। এতে তারা খালি থালা ও প্লেট হাতে মিছিল করবেন। শনিবার রাতে তিনি এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন এবং বলেন, ‘আমরা দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম গড়ে তুলছি, কিন্তু নিজেদের জীবনে নিরাপত্তা ও স্বীকৃতির নিশ্চয়তা পাই না। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি শুনলেও কোনো বাস্তব ফল হয়নি। তাই ‘খালি থালা হাতে’ রাস্তায় নামা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। এটি আমাদের অন্তরের বঞ্চনা ও অসম্মানের প্রতিবাদ।’
তিনি আরও বলেন, সরকার চাইলে যে কোনো সময় এই সংকটের সমাধান করতে পারে। সরকারের প্রতি বিনীত আবেদন, শিক্ষকদের আর অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখবেন না। শিক্ষক সমাজ মর্যাদা চায়, করুণা নয়।
দীর্ঘদিন ধরে বাড়িভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা। ৩০ সেপ্টেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় মাত্র ৫০০ টাকা বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করে। ৫ অক্টোবর শিক্ষক দিবসে তা প্রকাশিত হলে শিক্ষকদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয় এবং প্রজ্ঞাপন প্রত্যাখ্যান করা হয়।
গত ১২ অক্টোবর শিক্ষকেরা জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেন, যেখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে বিকেলে তারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান নেয় এবং সেখান থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। একই সঙ্গে সারাদেশের প্রায় ৩০ হাজার এমপিওভুক্ত স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলছে। এতে ক্লাস-পরীক্ষাসহ সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
শিক্ষকদের তিন দফা দাবি:
১. মূল বেতনের ওপর ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া
২. ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা
৩. কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা (বোনাস)
Comments