Image description

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে ৪ হাজার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই, নিরস্ত্র) নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই পদক্ষেপকে নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা জোরদার এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নিয়োগ প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি-

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এই ৪ হাজার এএসআই পদের মধ্যে ২ হাজার পদে সরাসরি নিয়োগ দেওয়া হবে এবং বাকি ২ হাজার পদে কনস্টেবল পদ থেকে পদোন্নতির মাধ্যমে এএসআই করা হবে। তবে, এএসআই পদে সরাসরি নিয়োগ পুলিশের ইতিহাসে এবারই প্রথম। এর আগে শুধুমাত্র কনস্টেবল ও এসআই পদে সরাসরি নিয়োগের বিধান ছিল।

নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার আগে কিছু বিধি সংশোধন করতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠানো চিঠিতে কয়েকটি শর্ত দেওয়া হয়েছে:

অর্থ বিভাগের বাস্তবায়ন অনুবিভাগ থেকে যাচাইকৃত বেতনস্কেল অনুসরণ করতে হবে।

প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করতে হবে।

৪ হাজার এএসআই পদ সৃজনের আগে ৪ হাজার কনস্টেবল পদ বিলুপ্তিকরণে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মতিসহ যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে হবে।

পদগুলো সৃজনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে।

পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত আইজিপি (এইচআরএম) আবু নাসের মোহাম্মদ খালেদ জানিয়েছেন, এসআই নিয়োগে যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছিল, এএসআই নিয়োগেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। এই প্রক্রিয়ায় প্রার্থীদের শারীরিক মাপ ও সহনশীলতা পরীক্ষা, লিখিত ও মনস্তত্ত্ব পরীক্ষা, কম্পিউটার দক্ষতা পরীক্ষা, বুদ্ধিমত্তা ও মৌখিক পরীক্ষা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং পুলিশ ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হতে পারে।

নির্বাচনী প্রেক্ষাপট এবং পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি-

আইজিপি বাহারুল আলম জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা সম্প্রতি বেশ কিছু ফোর্সের নিয়োগের বিষয়ে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছেন এবং এই এএসআই নিয়োগ সেই কার্যক্রমেরই অংশ। তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, "৫০ শতাংশ নিয়োগ হবে সরাসরি আর ৫০ শতাংশ নিয়োগ হবে পদোন্নতির মাধ্যমে। বিধিতে কিছু সংশোধনের প্রয়োজন ছিল, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সেটি করে দিচ্ছে। এর মাধ্যমে নিয়োগের পথটা একটু সুগম হলো।"

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই বড় আকারের নিয়োগ পুলিশ বাহিনীর কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে এবং নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও সুসংগঠিত করবে। এটি নির্বাচনী সহিংসতা মোকাবেলা, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশের সক্ষমতাকে আরও উন্নত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গত ২৮ আগস্ট পুলিশ সদর দপ্তর জেলাভিত্তিক নিয়োগযোগ্য শূন্যপদের তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় মোট ২ হাজার শূন্যপদ দেখানো হয়েছে। সবচেয়ে বেশি শূন্যপদ রয়েছে ঢাকা জেলায় (১৬৭টি) এবং এর পরেই রয়েছে চট্টগ্রাম (১০৬টি)।

এই নিয়োগ প্রক্রিয়া নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সম্পন্ন হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।