রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল ও কলেজ ক্যাম্পাসে গত ২১ জুলাই যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এই ভয়াবহ দুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে 'পাইলটের উড্ডয়ন ত্রুটি' চিহ্নিত করা হয়েছে। বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা প্রেস সচিব শফিকুল আলম এই তথ্য জানান। এর আগে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির সদস্যরা।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, প্রশিক্ষণের সময় পাইলট যখন বিমানটি ফ্লাই করছিলেন, তখন পরিস্থিতি তার আয়ত্তের বাইরে চলে যায়, যার ফলশ্রুতিতে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

গত ২১ জুলাই দুর্ঘটনার দিনই প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। আজ (বুধবার) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন তদন্ত কমিটির প্রধান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লে. জেনারেল এস এম কামরুল হাসান।

তদন্ত কমিটির সুপারিশ ও অন্যান্য তথ্য:

প্রেস সচিব জানান, তদন্ত কমিটি ১৫০ জনেরও বেশি ব্যক্তি, যার মধ্যে এক্সপার্ট এবং ভুক্তভোগী রয়েছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলে ১৬৮টি তথ্য উদ্ঘাটন করেছে। এর ভিত্তিতে ৩৩টি সুপারিশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে প্রধান যে সুপারিশ করা হয়েছে তা হলো: জননিরাপত্তার স্বার্থে এখন থেকে বিমানবাহিনীর সব প্রাথমিক প্রশিক্ষণ ঢাকার বাইরে পরিচালিত হবে।

এছাড়াও তদন্তে আরও পাওয়া গেছে:

রাজউকের বিল্ডিং কোড লঙ্ঘন: বিধ্বস্ত হওয়া স্কুল ভবনটি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বিল্ডিং কোডের অনুমোদন অনুযায়ী নির্মিত হয়নি। বিল্ডিংয়ে ন্যূনতম তিনটি সিঁড়ি থাকার কথা থাকলেও, সেখানে মাঝ বরাবর ছিল মাত্র একটি সিঁড়ি। বিশেষজ্ঞ কমিটি মত দিয়েছে যে, তিনটি সিঁড়ি থাকলে হতাহতের সংখ্যা আরও কম হতো।

রানওয়ে সম্প্রসারণ: সুপারিশে বরিশাল ও বগুড়ায় রানওয়ে সম্প্রসারণ করার কথা এসেছে। আজকের মিটিংয়ে এই বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিল্ডিং কোড বাস্তবায়ন: রাজউকের বিল্ডিং কোড যাতে নতুন সম্প্রসারিত এলাকায় যথাযথভাবে পালিত হয়, সে বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই দুপুরে প্রশিক্ষণ চলাকালে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসে বিধ্বস্ত হয়। দেশের ইতিহাসে অন্যতম বড় এই সামরিক বিমান দুর্ঘটনায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ ৩৬ জন নিহত এবং শতাধিক আহত