
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে সবাইকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘কদিন আগে আমরা দেখেছি সংস্কার ও নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হচ্ছে। ঠিক একইভাবে সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমি একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে বুঝি, এর পেছনে কোনও না কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে। দেশপ্রেমিক সব মানুষ যদি সচেতন ও সতর্ক থাকি, তাহলে অবশ্যই আমরা এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে সক্ষম হবো। আমাদের যেকোনও মূল্যে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে।’
সোমবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর লেডিস ক্লাবে বিএনপির মিডিয়া সেল আয়োজিত দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিগত স্বৈরাচারী সরকার রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দিকে তাকিয়ে থাকি। সেই সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
সাংবাদিকদের সতর্ক থাকার পাশাপাশি সত্য ঘটনা প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আমি মনে করি এখানে আপনাদের বিরাট ভূমিকা আছে। বর্তমানে বিভিন্ন বিষয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আপনারা যদি আপনাদের জায়গা থেকে সত্য ঘটনা তুলে ধরেন, তাহলে আমরা এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে সক্ষম হবো। আজকে দলের পক্ষ থেকে আমার অনুরোধ থাকবে—আসুন, যে প্রত্যাশায় ১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা জীবন উৎসর্গ করেছেন একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্য, পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার সমুন্নত রাখার জন্য সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ আত্মাহুতি দিয়েছেন। গত ১৬-১৭ বছরে গণতান্ত্রিক উত্তরণের লড়াইয়ে যারা গুম-খুনের শিকার হয়েছেন, তাদের ত্যাগ যেন বৃথা না যায়, তা নিয়ে কাজ করি।’
তারেক রহমান বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে যারা স্বৈরাচারকে বিদায় করার জন্য, গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়েছেন, প্রতিটি মানুষের এই জীবন উৎসর্গ যেন সার্থক হয়—তার জন্য সবাইকে এক প্ল্যাটফর্মে এসে দাঁড়াতে হবে। আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। আমাদের সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে।’
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘কোথাও কিছু একটা করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পতিত স্বৈরাচার, সরকারের একটি মহল, তারা তাদের ষড়যন্ত্রে এখনও লিপ্ত আছে। আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি, তাহলে এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে সক্ষম হবো। আমাদের সর্বপ্রথম এবং একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত—মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার যেকোনও মূল্যে প্রতিষ্ঠা করা ও দেশের মানুষের অর্থনীতির স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে পারবো।’
বিএনপির পক্ষ থেকে উত্থাপিত সংস্কার প্রস্তাবের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘সে সময়ে যেভাবে সাংবাদিকরা আমাদের পাশে ছিলেন এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণে বাংলাদেশের পাশে ছিলেন, তাদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা।’ আগামী দিনেও তিনি সাংবাদিকদের বিএনপির পাশে থাকার আহ্বান জানান।
ইফতার মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য রাখেন।
বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মওদুদ আলমগীর হোসেন পাভেলের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় ইফতার মাহফিলে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া এই আয়োজনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, যুগান্তর সম্পাদক আবদুল হাই সিকদার, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খানসহ বিশিষ্ট সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
Comments