আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর দুই দোসরের বিরুদ্ধে ঘোষিত রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি। দলটি আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, ‘সারা বিশ্বের জনমত এবং বাংলাদেশের জনগণের দাবী ও প্রত্যাশা ছিল- যেন পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসরদের মানবতাবিরোধী ও নৃশংস, জঘন্য হত্যাকাণ্ড এবং গণহত্যার অপরাধের বিচার করা হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে ঘোষিত রায়ে দীর্ঘ ১৬ বছরের গুম-খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার এবং ২০২৪ ছাত্র গণঅভ্যূত্থানে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের’ শিকার সহস্রাধিক শহীদের আত্মা শান্তি পাবে এবং তাদের পরিবার পরিজনদের ক্ষোভ কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে।’
সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল জুলাই গণহত্যার দায়ে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শুনিয়েছেন। এই রায়ের পর রাতে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিক এ প্রতিক্রিয়া জানান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসীবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে। এই দীর্ঘ রক্তাক্ত সংগ্রামে শত সহস্র বিরোধী দলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ সমাজের সর্বস্তরের অসংখ্য নাগরিক গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মামলা-হামলা, নির্যাতন-নিপীড়ন ও অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। অবশেষে ২৪-এর গণ-অভ্যূত্থানে ছাত্র-জনতা-শ্রমিক, নারী-শিশুসহ সহস্রাধিক নাগরিকের আত্মদান, অন্ধত্ব, চিরপঙ্গুত্ব বরণের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের জঘন্যতম ফ্যাস্টিস শেখ হাসিনা ও আওয়ামী বাকশালী শাসনামলের পতন হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আইনের শাসন এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বিএনপি এ ব্যাপারে জনগণকে সদা সর্বদা সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। একইসঙ্গে বিএনপি অন্যান্য মামলায় অভিযুক্তদের সুবিচারের দাবী জানাচ্ছে।’
বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ ও ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।




Comments