Image description

দীর্ঘ ৩৮ বছর পর ভোট উৎসবে ফিরছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। এই ঐতিহাসিক নির্বাচনকে ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে যেমন বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ, তেমনি নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

সর্বশেষ ১৯৮৭ সালে জগন্নাথ কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পর এটিই প্রথম নির্বাচন। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ১৬ হাজার ৪৪৫ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৮ হাজার ৪৭৯ জন এবং পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ১৭০ জন। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদ মিলিয়ে মোট ১৮৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯টি কেন্দ্রের ১৭৮টি বুথে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচন সুষ্ঠু করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক জানান, আজ থেকেই ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সক্রিয় রয়েছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, "নিরাপত্তার বিষয়ে আমরা কোনো আপস করছি না। কেবল অনুমোদিত ব্যক্তি ও পরিচয়পত্রধারী ভোটাররাই কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন।"

নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন প্রার্থীরা।

ছাত্রশিবির সমর্থিত ভিপি পদপ্রার্থী রিয়াজুল ইসলাম একটি সুষ্ঠু নির্বাচন এবং দ্রুত ফলাফল ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন।

ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থী এ কে এম রাকিব নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ও নিরাপত্তার ওপর জোর দিয়েছেন।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট সমর্থিত গৌরব ভৌমিক জকসু নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করলেও কমিশনের ভূমিকা নিয়ে কিছুটা সংশয় প্রকাশ করেছেন।

এদিকে জাতীয় ছাত্রশক্তি সমর্থিত প্রার্থী কিশোয়ার আনজুম সাম্য কমিশনের কার্যক্রমে হতাশা প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদের নির্ভয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ প্রতীক্ষিত এই নির্বাচন নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত। লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী লাবণী আক্তার কবিতা বলেন, "আমরা এমন প্রতিনিধি চাই যারা দলীয় প্রভাবমুক্ত থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবাসন, পরিবহন ও ক্যান্টিনের সমস্যা সমাধানে কাজ করবে।"

উল্লেখ্য, নির্বাচনের দিন পরিচয়পত্র বহন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কালকের এই নির্বাচনের মাধ্যমে দীর্ঘ চার দশকের ছাত্র রাজনীতির শূন্যতা কাটিয়ে নতুন নেতৃত্ব পাবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়—এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট সবার।

মানবকন্ঠ/আরআই