Image description

ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদির ওপর গুলি চালানো সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ডিজিটাল ইনভেস্টিগেটিভ মিডিয়া ‘দ্য ডিসেন্ট’। ৫০টিরও বেশি ছবি ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে তারা জানিয়েছে, হামলাকারীর নাম ফয়সাল করিম মাসুদ (ছদ্মনাম দাউদ খান)। আঁতকে ওঠার মতো তথ্য হলো, হামলার মাত্র তিন দিন আগে (৯ ডিসেম্বর) এই ব্যক্তি ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারে হাদির ঠিক পাশেই বসে আলোচনা শুনছিলেন।

দ্য ডিসেন্ট তাদের ফেসবুক পেজে এক প্রতিবেদনে জানায়, তারা তিনটি ভিন্ন উৎসের ছবি ও ভিডিও বিশ্লেষণ করেছে:

১. গত ৯ ডিসেম্বর ইনকিলাব কালচারাল সেন্টারের সিসিটিভি ফুটেজ।
২. ১২ ডিসেম্বর হামলার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ।
৩. ফয়সাল করিম মাসুদের ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম এবং আওয়ামীপন্থী বিভিন্ন পেজের ৫০টিরও বেশি ছবি।

বিশ্লেষণে দেখা যায়, হাদির ওপর মোটরসাইকেলের পেছন থেকে গুলি চালানো ব্যক্তির বাম হাতে থাকা বিশেষ ডিজাইনের ঘড়ির সঙ্গে ফয়সালের ইনস্টাগ্রামে থাকা ছবির ঘড়ির হুবহু মিল রয়েছে। এছাড়া দুটি ফেস ডিটেকশন অ্যাপ ব্যবহার করে ৯ ডিসেম্বর হাদির পাশে বসে থাকা ব্যক্তির সঙ্গে ফয়সালের চেহারার মিল পাওয়া গেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শনাক্ত হওয়া ফয়সাল করিম মাসুদ রাজধানীর আদাবর থানা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা। সংবাদমাধ্যমের পুরোনো খবর অনুযায়ী, তিনি ঢাকা মহানগর উত্তর ও আদাবর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হিসেবেও পরিচিত।

অনুসন্ধানী সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ৯ ডিসেম্বরের একটি ছবি শেয়ার করে জানান, ছবিতে লাল বৃত্তে চিহ্নিত ফয়সাল ওসমান হাদির ঠিক পাশে বসে ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিশ্বস্ত অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

ফয়সাল করিম মাসুদের বিরুদ্ধে অপরাধের গুরুতর রেকর্ড রয়েছে। ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকায় একটি অফিসে ঢুকে অস্ত্রের মুখে ১৭ লাখ টাকা লুট ও ডাকাতির ঘটনায় তিনি র‍্যাবের হাতে প্রধান আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। সেই সময় মূলধারার গণমাধ্যমে তার ছবিসহ খবর প্রকাশিত হয়। তবে ডাকাতি ও অস্ত্র মামলার আসামি হয়েও তিনি কীভাবে এত দ্রুত ছাড়া পেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর বিজয়নগরে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে ওসমান হাদি এভারকেয়ার হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন। তার অবস্থা এখনো সংকটাপন্ন। এদিকে হাদির ওপর হামলাকারীকে ধরতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি), গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও র‍্যাবের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনী সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করছে।