Image description

দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন কমে গতকাল রোববার (৯ নভেম্বর) ৪০২ কোটি টাকার চলে এসেছে। এদিন লেনদেনে অংশ নেওয়া ৮৪ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দরপতন হয়েছে। ডিএসইর সব ধরনের সূচকের পতন হয়েছে এদিন। প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৬৮ পয়েন্ট। আগের কর্মদিবস বৃহস্পতিবারের তুলনায় রোববার বাজারে মূলধনের পরিমাণ কমেছে পাঁচ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা শরিয়াভিত্তিক পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের (এক্সিম ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং ইউনিয়ন ব্যাংক) শেয়ার গত বৃহস্পতিবার লেনদেন স্থগিত করেছে ডিএসই। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) পরামর্শে ডিএসই এই লেনদেন স্থগিত করেছিল। অবশ্য এর আগের দিন বুধবার নানা অনিয়মে বিপর্যস্ত শরিয়াভিত্তিক পাঁচ ব্যাংক একীভূত করতে পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। 

ওইদিন তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এ বিষয় জানিয়ে পাঁচ ব্যাংকের সচিবদের পৃথক পৃথক চিঠি পাঠানো হয়েছে। একীভূত প্রক্রিয়ায় থাকা পাঁচ ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গে আহসান এইচ মনসুর বলেন, শেয়ারহোল্ডারদের ইকুইটি এখন নেগেটিভ। তাই শেয়ার দর জিরো বিবেচনা করা হবে। এ জন্য কাউকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না। খবরটি দ্রুত ছড়িয়ে পরে পুঁজিবাজারের সিকিউরিটিজগুলোতে। এতে গত বৃহস্পতিবারে পতনে ঢেকে যায় ডিএসই। সেই পতন আজও রয়েছে।  

অবশ্য লেনদেন শুরুতে শেয়ার কেনার চাপে সূচক উত্থান হয়েছিল। লেনদেন শুরুর প্রথম ১১ মিনিটে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৪ পয়েন্ট উত্থান হয়। বেলা বাড়ার পর শেয়ার কেনা কমে বিক্রি চাপ বাড়ে। পরে সূচকটি পতনে ফিরে আসে। লেনদেন শুরুর ৩৮ মিনিটে সূচক ডিএসইএক্স ৯ পয়েন্ট পতন হয়। পরে সেই পতন গতি আরও বাড়ে। লেনদেন শেষে সূচক ডিএসইএক্সের পতন হয় ৬৮ দশমিক শূন্য এক পয়েন্ট। সূচকটি কমে দিনশেষে দাঁড়ায় চার হাজার ৮৯৯ দশমিক ৯২ পয়েন্টে। ডিএসইএস সূচক ১৬ দশমিক ৬০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ২২ দশমিক ৬০ পয়েন্টে। ডিএস৩০ সূচক ১১ দশমিক ৮১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছেেএক হাজার ৯২৮ দশমিক ৭৯ পয়েন্টে।

গতকাল লেনদেন হয়েছে ৪০২ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কর্মদিবস বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল  ৪১৯ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইতে মূলধন দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৮৫ হাজার ৫১৫ কোটি ৪২ লাখ টাকা। গত বৃহস্পতিবারের মূলধন ছিল ছয় লাখ ৯০ হাজার ৯১৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এদিন লেনদেন হওয়া ৩৯০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের মধ্যে দর বেড়েছে ৩৪টির, কমেছে ৩২৯টির বা ৮৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ এবং শেয়ার দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির।

লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৭ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ১৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, মনোস্পুল বাংলাদেশের ১৩ কোটি তিন লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ১০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং ওরিয়ন ইনফিউশনের ১০ কোটি ছয় লাখ টাকার শেয়ার। এদিন দর কমার শীর্ষে উঠে এসেছে ফারইস্ট ফাইন্যান্সের শেয়ার। কোম্পানিটির দর কমেছে ১০ দশমিক ৫৮ শতাংশ। অন্যদিক দর বাড়ার শীর্ষে উঠে এসেছে ইফাদ অটোসের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ছয় দশমিক ৩৮ শতাংশ।