Image description

বাংলাদেশে সরকারি ক্রয় ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ, দক্ষ ও জবাবদিহিমূলক করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি (বিপিপিএ) ২০১১ সালে ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই-জিপি) সিস্টেম চালু করে। এই কেন্দ্রীভূত ডিজিটাল প্ল্যাটফরমের মাধ্যমে সরকারি দরপত্র আহ্বান, দরপত্র দাখিল ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন করা সম্ভব হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ই-জিপি সিস্টেমে আহ্বানকৃত দরপত্রের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, পাশাপাশি দরদাতা ও ক্রয়কারী সংস্থার নিবন্ধনেও লক্ষ্য করা যাচ্ছে ব্যাপক অগ্রগতি।

বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ থেকে শুরু করে ২০২৫ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ই-জিপি সিস্টেমের মাধ্যমে আহ্বানকৃত দরপত্রের মোট সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, যার মোট মূল্য ১০ লাখ ২৯ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকা। ২০১১ থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত আহ্বানকৃত মোট দরপত্রের সংখ্যা ছিল ৮ লাখ ৭৭ হাজার, যার মোট মূল্য ছিল ৯ লাখ ২২ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা।

২০২৫ সালের নভেম্বরে এক মাসের মধ্যে ই-জিপিতে ২৩ হাজার দরপত্র আহ্বান নতুন মাসিক রেকর্ড সৃষ্টি করেছে। ই-জিপি চালুর পর থেকে এক মাসে আহ্বানকৃত দরপত্রের সংখ্যাই সর্বোচ্চ।

ই-জিপি পরিচালনার সঙ্গে সংযুক্ত সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে, আহ্বানকৃত দরপত্রের এ উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ২০২৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা (পিপিআর), ২০২৫-এর প্রয়োগের সঙ্গে সম্পর্কিত। নতুন বিধিমালায় সব সরকারি ক্রয়ে ই-জিপির ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যা প্ল্যাটফরমের কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করেছে। এখন প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০টি নিবন্ধনের আবেদন বিপিপিএ-তে আসছে, যেখানে আগে দৈনিক গড় ছিল মাত্র ৬০ থেকে ৭০।

তুলনামূলক তথ্যে আরো দেখা যায়, ২০২৫ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ই-জিপিতে নিবন্ধিত দরদাতার সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ৪৩ হাজার ৩৭৪ হয়েছে, যা ২০২৪ সালের নভেম্বরে ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৭৭৭।

সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, ২০১১ সালে সিস্টেম চালুর পর এক বছরে ২৩ হাজার দরদাতার নিবন্ধনের এ ধরনের বৃদ্ধি আগে কখনো দেখা যায়নি।

নিবন্ধিত ক্রয়কারী সংস্থার সংখ্যা ২০২৪ সালের নভেম্বরের ১ হাজার ৪৭৪ থেকে ২০২৫ সালের নভেম্বরে বেড়ে ১ হাজার ৪৯৯ হয়েছে। একইভাবে, ক্রয়কারীর সংখ্যা ১২ হাজার ৬০২ থেকে ১৪ হাজার ৩৭৪ হয়েছে।

বিপিপিএ-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) এস এম মঈন উদ্দীন আহম্মেদ পিপিআর, ২০২৫-এর প্রণয়ন ও কার্যকর করা দেশের সরকারি ক্রয় সংস্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, আমরা আশা করি, পিপিআর, ২০২৫ সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়াকে সুসংগঠিত করবে। সরকারি ক্রয়ে প্রতি বছরে প্রায় ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমমূল্যের অর্থ ব্যয় হয়। পিপিআর, ২০২৫ প্রয়োগের ফলে সরকারি ক্রয়ে স্বচ্ছতা, দায়বদ্ধতা এবং কার্যকারিতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা যায়।