দেশের বাজারে স্বর্ণের দামে ফের বড় লাফ দিয়েছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ভরিতে ৩ হাজার ৯৬৬ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এতে এই মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ২২ হাজার ৮৩ টাকা। দেশের ইতিহাসে এটিই স্বর্ণের সর্বোচ্চ দাম।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত জানায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) থেকে সারাদেশে নতুন এই দাম কার্যকর হবে।

বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) দাম বেড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী স্বর্ণের হার:

১. ২২ ক্যারেট: প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) ২ লাখ ২২ হাজার ৮৩ টাকা।
২. ২১ ক্যারেট: প্রতি ভরি ২ লাখ ১১ হাজার ৯৯৩ টাকা।
৩. ১৮ ক্যারেট: প্রতি ভরি ১ লাখ ৮১ হাজার ৭২৫ টাকা।
৪. সনাতন পদ্ধতি: প্রতি ভরি ১ লাখ ৫১ হাজার ৩৯৯ টাকা।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট এবং বাজুস নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার নকশা ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি ডিসেম্বর মাসে দফায় দফায় দাম বেড়েছে। এর আগে গত রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাতেও স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। তারও আগে ১৫ ডিসেম্বর দাম বাড়ানো হয়েছিল ১ হাজার ৪৭০ টাকা।

স্বর্ণের পাশাপাশি রুপার দামও পাল্লা দিয়ে বেড়েছে। ভরিতে ৩৮৫ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৯৫৭ টাকা। ২১ ক্যারেট রুপার ভরি ৪ হাজার ৭৩৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ৪ হাজার ৪৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রুপার দাম ৩ হাজার ৪১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

রুপার দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবেও স্থানীয় বাজারে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়া এবং সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে দায়ী করেছে বাজুস। মঙ্গলবার থেকেই রুপার এই নতুন দাম কার্যকর হবে।

স্বর্ণ ও রুপার দামের এই লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিয়ের মৌসুম ও উৎসবের আগে এমন মূল্যবৃদ্ধি সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।