Image description

সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলের নাটুয়াপাড়া হাটে প্রতি সপ্তাহে দু’দিন বসে এক ব্যতিক্রমী হাট—যার নাম ‘মানুষের হাট’। এখানে মানুষ দাস হিসেবে বিক্রি হয় না, বরং টিকে থাকার আশায় বিক্রি হয় তাদের ঘাম ও পরিশ্রম।

প্রতি শনিবার ও বুধবার কাক ডাকা ভোরেই কাজিপুর নাটুয়াপাড়া বাজারে শুরু হয় এই হাটের আনাগোনা। শত শত শ্রমিক আসে কাজের খোঁজে। কারও হাতে কোদাল, কারও কাঁধে বেলচা—সবাই অপেক্ষায় থাকে, যদি কোনো মালিক এসে ডাকে, যদি আজকের দিনে একটা কাজ মেলে।

তাদের চোখে একটাই আশা—আজ যেন কিছু আয় হয়, যাতে সন্তানের মুখে একবেলা ভাত তুলে দিতে পারেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে হাটে মালিকেরা ঘুরে ঘুরে শ্রমিক বেছে নিচ্ছেন। কেউ হাতের জোরে, কেউ অভিজ্ঞতায় দর বাড়িয়ে নিচ্ছেন। কারও দাম ওঠে ৫০০, কারও ৬০০, আবার কেউ কাজ না পেয়েই দাঁড়িয়ে থাকেন দিনের পর দিন।
 
হাটে আসা শ্রমিক করিম (৪৫) বলেন, ‘পরিবারের অবস্থা ভালো না থাকায় লেখাপড়া করতে পারিনি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সংসার চালাতে প্রতিমাসেই এখানে আসি। কখনো ৫০০, কখনো ৭০০ টাকায় দিন বিক্রি হয়। কিন্তু অনেক সময় কোনো কাজ পাই না। যেদিন কাজ পাই না, সেদিন পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হয়।’

কাজিপুর নাটুয়াপাড়া হাট বাজার ইজারাদার ও স্থানীয় বিএনপি নেতা আব্দুল লতিফ সরকার জানান, বহু বছর ধরে এই হাটে মানুষ বেচাকেনার মতো শ্রমবাজার বসে। এখানকার বেশিরভাগ মানুষ চরাঞ্চলের দরিদ্র পরিবারের। তারা প্রতিদিনের শ্রম বিক্রি করেই বাঁচে।