Image description

কঠোর পরিশ্রম আর মেধা থাকলে যে কোনো ছোট কাজ দিয়েও স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত নাটোরের সিংড়ার তরুণ উদ্যোক্তা আসাদ আলী। জিলাপি, পিয়াজু আর সিঙ্গাড়া বিক্রি করে বর্তমানে তিনি প্রতি মাসে অন্তত ৪০ হাজার টাকা আয় করছেন। তার হাতের তৈরি এসব মুখরোচক খাবারের স্বাদ আর গুণগত মান এরই মধ্যে এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

আসাদ আলীর বাড়ি সিংড়া উপজেলার ২নং ডাহিয়া ইউনিয়নের বিয়াশ গ্রামে। সিংড়া-বারুহাস রাস্তা সংলগ্ন বিয়াশ চারমাথায় একটি সাদামাটা দোকানে তিনি তার ব্যবসা পরিচালনা করেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাথার ওপর কালো পলিথিনের ছাউনি, একটি লম্বা টেবিল, দুটি বেঞ্চ আর একটি মাটির চুলা নিয়ে তার সাধারণ দোকান। তবে এই জরাজীর্ণ দোকানেই সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে ভোজনরসিকদের আনাগোনা।

উদ্যোক্তা আসাদ জানান, চার বছর আগে তিনি শ্রমিকের কাজ করতেন। জীবন পরিবর্তনের আশায় শুরু করেন এই ক্ষুদ্র ব্যবসা। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত টানা ১২ ঘণ্টা কাজ করেন তিনি। সকালে ভাজেন গরম জিলাপি আর বিকেলে পিয়াজু ও সিঙ্গাড়া। এর মধ্যে জিলাপির চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। মিলাদ, দোয়া মাহফিলসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে এখন আসাদের জিলাপি অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।

আয়-ব্যয়ের হিসাব জানিয়ে আসাদ বলেন, “প্রতি কেজি জিলাপি তৈরিতে খরচ হয় ৯০ টাকা, আর বিক্রি করি ১৪০ টাকায়। কেজি প্রতি লাভ থাকে ৫০ টাকা। জিলাপির পাশাপাশি সিঙ্গাড়া ও পিয়াজু বিক্রি করে প্রতিদিন গড়ে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা বেচাকেনা হয়। সব খরচ বাদে প্রতিদিন ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা লাভ থাকে। মাসে গড়ে আয় হয় ৪০ হাজার টাকার ওপরে।”

দোকানে আসা ক্রেতা তানজিল ইসলাম ও মনতাজুর রহমান বলেন, “আমরা প্রায়ই এখান থেকে মচমচে ও সুস্বাদু জিলাপি খাই। আসাদ ভাইয়ের খাবারের মান যেমন ভালো, তেমনি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন।”

স্থানীয় ব্যবসায়ী মৃদুল হাসান জানান, আসাদ এক সময় কঠোর পরিশ্রমী শ্রমিক ছিলেন। তিন-চার বছর ধরে এই ব্যবসায় লেগে থেকে তিনি এখন সফল। তার হাতের খাবারের স্বাদ ও চারিত্রিক গুণাবলীর কারণে দূর-দূরান্ত থেকেও ক্রেতারা এখানে ছুটে আসেন।

সফল এই তরুণ উদ্যোক্তা আসাদ আলী জানান, ছোট এই ব্যবসা নিয়েই তিনি বর্তমানে অত্যন্ত সুখে আছেন এবং পরিবার নিয়ে ভালো আছেন। ভবিষ্যতে ব্যবসার আরও প্রসার ঘটানোর স্বপ্ন দেখছেন তিনি।