জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে গাজা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে আবারও ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার উত্থাপিত খসড়া প্রস্তাবে গাজায় তাৎক্ষণিক, নিঃশর্ত ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং ত্রাণ সহায়তার প্রবাহে সব বাধা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

১৫ সদস্যের পরিষদের নির্বাচিত ১০ সদস্য এ প্রস্তাব তোলে। ১৪টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলেও যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেয়। এতে গত দুই বছরে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর সংখ্যা দাঁড়াল ছয়। প্রস্তাবে হামাস ও অন্যান্য গোষ্ঠীর হাতে আটক সব জিম্মিকে দ্রুত ও নিঃশর্তভাবে মুক্তি দেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছিল।

ডেনমার্কের জাতিসংঘ দূত ক্রিস্টিনা মার্কুস লাসেন বলেন, গাজায় এখন দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হয়েছে। এটি অনুমান নয়, বাস্তবতা। একই সঙ্গে ইসরায়েল গাজা সিটিতে সামরিক অভিযান বিস্তৃত করেছে, যা বেসামরিক মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘে ইসরায়েলকে কূটনৈতিক সুরক্ষা দিয়ে আসছে। তবে সাম্প্রতিক কাতার হামলা নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতিতে বিরলভাবে সমর্থন দিয়েছিল ওয়াশিংটন। যদিও সেই বিবৃতিতে ইসরায়েলের নাম উল্লেখ ছিল না।

ভোটের আগে মার্কিন কূটনীতিক মরগান ওর্তাগাস বলেন, এই যুদ্ধ শুরু করেছে হামাস। ইসরায়েল যুদ্ধ শেষ করতে রাজি, কিন্তু হামাস তা প্রত্যাখ্যান করছে। জিম্মিদের মুক্তি দিয়ে অস্ত্র নামালে যুদ্ধ আজই শেষ হতে পারে।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের জাতিসংঘ দূত ড্যানি ড্যানন জানান, ইসরায়েল কাতার হামলা নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বিবৃতিতে পুরোপুরি সন্তুষ্ট ছিল না। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা বিবেচনায় তা মেনে নেয় তারা। তিনি আরও জানান, আগামী সপ্তাহে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ভাষণের পর তিনি ওয়াশিংটনে গিয়ে ২৯ সেপ্টেম্বর হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ আগামী মঙ্গলবার গাজা ইস্যুতে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করবে। একই সময়ে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ অধিবেশনেও বিশ্বনেতারা যোগ দেবেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়, যাতে ইসরায়েলের হিসাবে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয় এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এরপর থেকে গাজায় চলমান যুদ্ধে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।