
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দখলদার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ভাষণ চলাকালীন সময়ে ব্যাপক কূটনৈতিক বয়কটের ঘটনা ঘটেছে। নেতানিয়াহু পোডিয়ামে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশসহ ৭৭টি দেশের কূটনীতিক ও প্রতিনিধিরা অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে চলে যান।
যদিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ কেউ বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত থাকার দাবি তুলে বিতর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করেছিলেন, ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ সেই দাবি খণ্ডন করেছে। ইসরাইলি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে তারা জানিয়েছে, নেতানিয়াহুর ৪১ মিনিটের দীর্ঘ ভাষণের সময় বাংলাদেশসহ ৭৭টি দেশের আসন ফাঁকা ছিল।
ওয়াইনেট নিউজ-এর তথ্য অনুযায়ী, এই ৭৭টি প্রতিনিধি দল হয় সভাকক্ষে উপস্থিত হয়নি, অথবা নেতানিয়াহুর বক্তব্য শুরু হতেই হল থেকে বেরিয়ে যায়। বয়কটকারী দেশগুলোর মধ্যে ইসরাইলের চার প্রতিবেশী—মিসর, জর্ডান, লেবানন ও সিরিয়া—অন্তর্ভুক্ত ছিল। এছাড়াও সৌদি আরব, তুরস্ক ও ইরানও এই বয়কটে অংশ নেয়।
তবে ইসরাইলি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সব অনুপস্থিতিই রাজনৈতিক বয়কট ছিল না; অনেকেই কেবল সকালবেলার অধিবেশনে উপস্থিত হননি। উদাহরণস্বরূপ, জর্ডান ও মিসর আসন গ্রহণ না করলেও তারা বিক্ষোভে অংশ নেয়নি। অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রতিনিধি দল প্রতিবাদ জানিয়ে হল ছেড়ে বেরিয়ে গেলেও বাইরে দাঁড়িয়ে নেতানিয়াহুর বক্তব্য শোনেন।
বিপরীতে, ২০২০ সালের আব্রাহাম চুক্তির স্বাক্ষরকারী বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রতিনিধিরা নিজ আসনে বসেই ভাষণ শোনেন, যদিও গাজা যুদ্ধ নিয়ে এই দুই দেশের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে।
বয়কটকারী অন্যান্য দেশের মধ্যে ছিল স্পেন, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, আয়ারল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কুয়েত, কাতার, ওমানসহ লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কয়েকটি দেশ।
ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ মনে করছে, এই নাটকীয় বয়কট প্রমাণ করে যে গাজা যুদ্ধের কারণে বিশ্ব মঞ্চে দেশটির কূটনৈতিক সংকট আরও গভীর হচ্ছে।
Comments