জাতিসংঘ প্রস্তাবকে ‘আক্রমণের আইনি ভিত্তি’ হিসেবে চীনের ব্যবহার: তাইওয়ানের অভিযোগ

তাইওয়ান বুধবার অভিযোগ করেছে যে, বেইজিং 'এক চীন নীতি'র পুনরুল্লেখ করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের একটি প্রস্তাবকে ব্যবহার করে তাইওয়ানের বিরুদ্ধে "ভবিষ্যতে সামরিক আগ্রাসনের আইনি ভিত্তি তৈরি" করতে চাইছে। তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
চীনের জারি করা একটি নথিতে বলা হয়েছে যে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব-২৭৫৮ পুরোপুরি 'এক চীন নীতি' প্রতিফলিত করে। এই প্রস্তাবে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনকে জাতিসংঘে চীনের একমাত্র বৈধ প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। ফলে এ প্রস্তাব অনুসারে, তাইওয়ান আলাদা স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে না।
তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে চীনের দাবিকে "ইচ্ছাকৃতভাবে আন্তর্জাতিক সমাজকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা" বলে অভিহিত করেছে। মন্ত্রণালয় আরও বলেছে যে, এর মাধ্যমে চীন তাইওয়ান প্রণালীর বর্তমান স্থিতাবস্থা বা স্ট্যাটাস-ক্যু বদলাতে চাইছে এবং "তাইওয়ানের বিরুদ্ধে ভবিষ্যৎ সামরিক আগ্রাসনের জন্য আইনি ভিত্তি তৈরি করছে।"
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, জাতিসংঘ ও অন্যান্য বহুপক্ষীয় আন্তর্জাতিক ব্যবস্থায় তাইওয়ানের ২ কোটি ৩০ লাখ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে কেবল তাইওয়ানের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার। মন্ত্রণালয়ের দাবি, জাতিসংঘের উক্ত প্রস্তাবে তাইওয়ানের নামই উল্লেখ নেই।
গত মঙ্গলবার প্রকাশিত চীনা নথিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের এই "প্রস্তাব স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, বিশ্বে একটি মাত্র চীন আছে এবং গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকারের হাতেই গোটা চীনের বৈধ প্রতিনিধিত্ব রয়েছে, যার মধ্যে তাইওয়ান অঞ্চলও অন্তর্ভুক্ত। দুই চীন বা এক চীন কিংবা এক তাইওয়ান বলে কিছু নেই।"
নথিতে আরও বলা হয়েছে যে, বেইজিং স্বাভাবিকভাবেই পুরো চীনের সার্বভৌমত্ব ভোগ করে এবং তা প্রয়োগ করে, যার মধ্যে তাইওয়ান অঞ্চলও আছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও চীনের সমস্ত অধিকার ভোগ ও প্রয়োগ করে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকার।
চীনের দাবি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে ১৯৪৫ সালেই তাইওয়ানের মর্যাদা "মৌলিকভাবে নির্ধারিত হয়েছিল"। দেশটি বলেছে, সে সময়কার বিজয় "পাশ্চাত্যের কিছু রাজনীতিবিদের ভুয়া বর্ণনা দিয়ে খাটো করা যাবে না।" চীন তাইওয়ানকে বিচ্ছিন্ন প্রদেশ বলে মনে করে। তবে ১৯৪৯ সাল থেকে তাইপে এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছে এবং নিজেদের স্বাধীন বলে জোর দিয়ে বলছে।
Comments