১৯৪৬ সালে মাইক্রোনেশিয়ায় পারমাণবিক বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সে সময়ের একটি সাদাকালো ছবি এআই দিয়ে রঙিন করা হয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি নিজ দেশের সামরিক কর্মকর্তাদের পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন। রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে তাল মেলাতেই তিনি এমন নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর থেকেই আলোচনা চলছে- কোন দেশের পারমাণবিক সক্ষমতা কতটুকু।
বর্তমানে নয়টি দেশের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র আছে। দেশগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ভারত, পাকিস্তান, উত্তর কোরিয়া ও ইসরায়েল। আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব দেশের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতায় এগিয়ে আছে রাশিয়া।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরপি) -এর জানুয়ারি মাসের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার মোট যুদ্ধমুখী ওয়ারহেডের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি- ৪ হাজার ৩০৯টি। এরপর আছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির কাছে আছে ৩ হাজার ৭০০টি ওয়ারহেড। চীনের ৬০০; ফ্রান্সের ২৯০; যুক্তরাজ্যের ২২৫; ভারতের ১৮০; পাকিস্তানের ১৭০; ইসরায়েলের ৯০ এবং উত্তর কোরিয়ার আছে প্রায় ৫০টি ওয়ারহেড। অস্ত্রের যে অংশে পরমাণু স্থাপন করা হয় সেটিকে ওয়ারহেড বলে।
এসআইপিআরপি-এর জুনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের পারমাণবিক অস্ত্র ভাণ্ডার অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় দ্রুতগতিতে বাড়ছে। ২০২৩ সাল থেকে প্রতি বছর প্রায় ১০০টি করে ওয়ারহেড যুক্ত হচ্ছে। পেন্টাগনের ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে অনুমান করা হয়, চীন ২০৩০ সালের মধ্যে ১ হাজারটির মতো পারমাণবিক অস্ত্রের মালিক হবে।
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া যথাক্রমে ১,৪৭৭ ও ১,১৫০টি ওয়ারহেড তাদের সামরিক সরঞ্জাম ভাণ্ডার থেকে সরিয়ে ফেলেছে। এগুলো এখন ধ্বংস করা হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিঙ্ক-ট্যাংক ফেডারেশন অব আমেরিকান সায়েন্টিস্টস (এফএএস)- এর মার্চের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব ওয়ারহেড এখনও তুলনামূলকভাবে অক্ষত আছে।
সিবিসি নিউজ বলছে, গত তিন দশক ধরে প্রায় নিষ্ক্রিয় থাকা পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার বিষয়টি হঠাৎই আবার আলোচনায় এসেছে। গত সপ্তাহে রাশিয়া একটি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। তবে সেখানে প্রকৃত কোনো বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়নি। এর প্রতিক্রিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্র আবার পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করবে।
এখন প্রশ্ন হলো তাহলে কি পারমাণবিক পরীক্ষা ফিরে আসছে? সিবিসি নিউজ বলছে, হ্যাঁ। তবে সেটি আংশিকভাবে। গত সপ্তাহে রাশিয়া যে ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে, সেটি পারমাণবিক ওয়ারহেড বহন করতে সক্ষম। রাশিয়া একই সঙ্গে আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং ক্রুজ মিসাইলের মহড়াও চালিয়েছে। এগুলোও পারমাণবিক বোমা বহনে সক্ষম।
গত বুধবার জানা যায়, রাশিয়া পানির নিচে চলতে পারে এমন একটি ড্রোনের পরীক্ষা করেছে। এটি উপকূলীয় শহরে ভয়াবহ পারমাণবিক হামলা চালাতে পারবে। উপকূলের কাছে বিস্ফোরিত হলে তেজষ্ক্রিয় সুনামি সৃষ্টি হবে। যা বড় শহরগুলোকে ধ্বংস করতে পারে। ভ্লাদিমিরি পুতিনের দাবি, ড্রোনটি এতটাই দ্রুত চলাচল করে যে এটি শনাক্ত বা বাধা দেওয়া প্রায় অসম্ভব।




Comments