ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের বিশাল বিক্ষোভ থেকে এক পর্যায়ে নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে হাইকমিশনের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন এবং ময়মনসিংহে দিপু চন্দ্র দাস নামের এক হিন্দু যুবককে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে ‘বিশ্ব হিন্দু পরিষদ’ (ভিএইচপি) ও ‘বজরং দল’ এই বিক্ষোভের ডাক দেয়। কর্মসূচির এক পর্যায়ে উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা অন্তত দুটি নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর তৎপরতায় তাদের প্রতিহত করা হয় এবং পুনরায় ব্যারিকেড স্থাপন করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে দিল্লি পুলিশ।
বর্তমানে হাইকমিশন এলাকাটি তিন স্তরের কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ঘিরে রাখা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিচ্ছেন, ফলে পুরো এলাকাটি থমথমে হয়ে পড়েছে।
এর আগে গত ২০ ডিসেম্বর রাতেও একদল লোক বাংলাদেশ হাইকমিশনের গেটে বিক্ষোভ ও হুমকি প্রদর্শন করেছিল। দিল্লিতে বাংলাদেশের প্রেস মিনিস্টার মো. ফয়সাল মাহমুদ জানান, সেদিন রাতে বিক্ষোভকারীরা ‘হিন্দুদের নিরাপত্তা দাও’ ও ‘হাইকমিশনারকে ধরো’ বলে স্লোগান দিয়েছিল।
তবে ওই ঘটনাকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল ‘বিভ্রান্তিকর প্রচারণা’ হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি দাবি করেছিলেন, সেখানে মাত্র ২০-২৫ জন লোক ছিল এবং তারা কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করেনি।
ভারতের এই ব্যাখ্যাকে ‘অতি সরলীকরণ’ উল্লেখ করে দ্ব্যর্থহীনভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন গত ২১ ডিসেম্বর বলেন, “ভারতের প্রেস নোটের বিষয়টি আমরা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ মিশন একটি অত্যন্ত সংবেদনশীল ও সুরক্ষিত কূটনৈতিক অঞ্চলে অবস্থিত। সেখানে কীভাবে একটি উগ্র সংগঠনের সদস্যরা বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করতে সক্ষম হলো, তা নিয়ে গুরুতর নিরাপত্তা ঘাটতির প্রশ্ন ওঠে।”




Comments