ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও চব্বিশের আন্দোলনের অন্যতম মুখ শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী অটোরিকশা চালক মো. কামাল হোসেন (৪৬)। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জামসেদ আহমেদ তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিবি পুলিশের পরিদর্শক ফয়সাল আহমেদ সাক্ষী কামালের জবানবন্দি ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করার আবেদন জানান। আবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন অর্থাৎ ১২ ডিসেম্বর শরিফ ওসমান হাদি মতিঝিলের খলিল হোটেল থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য কামাল হোসেনের অটোরিকশাটি ভাড়া করেন। পথিমধ্যে বিজয়নগর এলাকায় পৌঁছালে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। এই ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অটোরিকশা চালক কামাল সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছেন এবং তিনি স্বতস্ফূর্তভাবে সত্য সাক্ষ্য দিতে সম্মত হয়েছেন।
গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় নির্বাচনী প্রচারের সময় ওসমান হাদির ওপর হামলা চালানো হয়। অভিযোগ রয়েছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাদিকে উদ্ধার করে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানে ১৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গত ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের পল্টন থানায় মামলাটি দায়ের করেন। হাদির মৃত্যুর পর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়। মামলায় মূল পরিকল্পনাকারী, অর্থের জোগানদাতা ও নেপথ্য কুশলীদের আসামি করা হয়েছে।
এই ঘটনায় ইতোমধ্যে ফয়সালের স্ত্রী সাহেদা পারভীন সামিয়া, শ্যালক ওয়াহিদ আহমেদ এবং বান্ধবী মারিয়া আক্তার লিমাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তবে ঘটনার মূল হোতা ফয়সাল করিম মাসুদ এখনো পলাতক রয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁকে গ্রেপ্তারে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে।
সাক্ষী কামালের জবানবন্দি রেকর্ড শেষে আদালত তা নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেন। এই সাক্ষ্য মামলাটির বিচারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন আইনজীবীরা। বর্তমানে গ্রেপ্তারকৃত তিন আসামি কারাগারে রয়েছেন।




Comments