Image description

শীতের সময় ঠান্ডা আবহাওয়া, পানিশূন্যতা, গলা ব্যথা ও হজমের সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, শীতে প্রতিদিন কুসুম গরম পানি পান এসব সমস্যার ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সহজলভ্য ও নিরাপদ এই অভ্যাসটি শীতকালীন স্বাস্থ্যসুরক্ষায় অত্যন্ত কার্যকর।

শীতের মৌসুমে গরম পানি পান করা অনেকের অভ্যাস। এটি শুধু শরীরকে আরামই দেয় না, বরং এর রয়েছে নানাবিধ স্বাস্থ্যগুণ। চলুন জেনে নেওয়া যাক শীতে গরম পানি পানের মূল উপকারিতাগুলো-

১. হজমে সহায়তা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

শীতকালে সাধারণত মানুষের হজম প্রক্রিয়া কিছুটা মন্থর হয়ে পড়ে। গরম পানি পাকস্থলীর কার্যক্রম সক্রিয় রাখে এবং খাবার ভাঙতে সাহায্য করে। নিয়মিত সকালে খালি পেটে গরম পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় এবং হজমতন্ত্র সুস্থ থাকে।

২. সর্দি-কাশি ও গলা ব্যথায় দ্রুত আরাম

শীতকালীন সর্দি-কাশি, নাক বন্ধ থাকা এবং গলা ব্যথা এসব মৌসুমি রোগের সাধারণ উপসর্গ। গরম পানি গলার প্রদাহ কমিয়ে জমে থাকা শ্লেষ্মা বা কফ নরম করতে সাহায্য করে। ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস সহজ হয়। বিশেষজ্ঞরা জানান, হালকা গরম পানি সর্দি-কাশিতে তাৎক্ষণিক আরাম দিতে পারে।

৩. রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি ও শরীর উষ্ণ রাখা

ঠান্ডা আবহাওয়ায় রক্তনালী সংকুচিত হয়ে রক্ত সঞ্চালন ধীর হয়ে যায়, ফলে হাত-পা ঠান্ডা হয়ে থাকে। গরম পানি রক্তপ্রবাহ বাড়িয়ে শরীরকে ভেতর থেকে উষ্ণ রাখে। এটি পেশির জড়তা ও ক্লান্তি দূর করতেও সহায়তা করে।

৪. শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সহায়ক

উষ্ণ পানি শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়, যা ঘাম এবং রেচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বা বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে সাহায্য করে। এর ফলে ত্বক সতেজ থাকে, ব্রণ কমে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

৫. ওজন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর

শীতে কায়িক পরিশ্রম কমে যাওয়ায় অনেকের ওজন বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে। সকালে এক গ্লাস গরম পানি পান করলে মেটাবলিজম বা বিপাক হার বৃদ্ধি পায়, যা অতিরিক্ত ক্যালরি ও চর্বি পোড়াতে সহায়তা করে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে গরম পানি একটি সহজ সমাধান।

৬. পানিশূন্যতা রোধ বা হাইড্রেশন

শীতে তৃষ্ণা কম লাগার কারণে অনেকেই সারা দিনে পর্যাপ্ত পানি পান করেন না, যা শরীরে পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন সৃষ্টি করতে পারে। ঠান্ডা পানির চেয়ে কুসুম গরম পানি পান করা সহজ এবং শরীর তা দ্রুত শোষণ করতে পারে। ফলে শরীরের আর্দ্রতা বজায় থাকে।

শীতে গরম পানি পান একটি সহজ ও সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যচর্চা। তবে পানি যেন অতিরিক্ত গরম না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কুসুম গরম পানিই স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপকারী।