Image description

| ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ রোহিঙ্গা সংকটের চরম ভুক্তভোগী বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশাল আর্থিক, সামাজিক ও পরিবেশগত ব্যয় বহন করতে বাধ্য হচ্ছি। রাখাইন দিয়ে বাংলাদেশে মাদক প্রবেশসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড আমাদের সামাজিক কাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলেছে।’

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরের জেনারেল অ্যাসেম্বলি হলে আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বেকারত্ব ও দারিদ্র্যসহ আমাদের উন্নয়নমূলক চ্যালেঞ্জের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে রোহিঙ্গাদের কর্মসংস্থানের অনুমতি দিচ্ছি না।’

ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার বক্তব্যে তুলে ধরেন, ‘গণহত্যা শুরু হওয়ার আট বছর পেরিয়ে গেলেও রোহিঙ্গাদের দুর্দশা অব্যাহত রয়েছে। সংকট নিরসনে উদ্যোগের অভাব রয়েছে এবং আন্তর্জাতিক অর্থায়নেও ভয়াবহ ঘাটতি বিদ্যমান। রোহিঙ্গা সংকটের উৎপত্তি মিয়ানমার থেকে। এর সমাধান সেখানেই আছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন অবিলম্বে বন্ধ করতে মিয়ানমার ও আরাকান সেনাবাহিনীর ওপর কার্যকর চাপ সৃষ্টি করতে হবে এবং রাখাইনে তাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের জন্য কাজ শুরু করতে হবে।’

এসময় তার বক্তব্যে তিনি সংকটের টেকসই সমাধানে সাতটি প্রস্তাব তুলে ধরেন।

প্রধান উপদেষ্টা তার প্রস্তাবে বলেন, ‘প্রথমত, রাখাইনে যুক্তিসঙ্গত স্থিতিশীলতার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের জন্য একটি বাস্তব রোডম্যাপ প্রণয়ন করা; দ্বিতীয়ত, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ করতে মিয়ানমার ও আরাকান সেনাবাহিনীর ওপর কার্যকর চাপ প্রয়োগ করা এবং সম্প্রতি যারা বাংলাদেশে এসেছেন এবং যারা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন তাদের ফেরত নেওয়ার মাধ্যমে টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু করা; তৃতীয়ত, রাখাইনকে স্থিতিশীল করতে আন্তর্জাতিক সমর্থন জোগাড় করা এবং স্থিতিশীলতা পর্যবেক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক বেসামরিক উপস্থিতি নিশ্চিত করা; চতুর্থত, রাখাইন সমাজ ও শাসনে রোহিঙ্গাদের টেকসই সংহতকরণে আস্থা তৈরির পদক্ষেপে সহায়তা করা; পঞ্চমত, যৌথ প্রতিক্রিয়া পরিকল্পনার সম্পূর্ণ তহবিলের জন্য দাতাদের সহায়তাগুলো একত্রিত করা; ষষ্ঠত, জবাবদিহিতা এবং পুনরুদ্ধারমূলক ন্যায়বিচার অনুসরণ করা এবং সপ্তমত, মাদকদ্রব্য সংশ্লিষ্ট অর্থনীতি ধ্বংস করা এবং আন্তঃসীমান্ত অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াই করা।’