Image description

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর বাজার এলাকায় পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমকে তার পাশ থেকে আওয়ামী লীগের লোকজন সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্থানীয় এক যুবদল নেতা। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের লোকজনকে পুনর্বাসন না করার কথাও বলেন। ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে, যা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে।

ঘটনাটি ঘটেছে গত সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ভজনপুর বাজার এলাকায়। ওই যুবদল নেতার নাম হাসিনুর রহমান। তিনি ভজনপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।

ভাইরাল ভিডিওতে কী ছিল?

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে হাসিনুর রহমান সারজিস আলমকে লক্ষ্য করে বলছেন, “আপনার আশপাশের আওয়ামী লীগের লোকদের সরান। এই যে দেখেন, আমি দেখায় দিচ্ছি। আসেন, আপনি এগুলোকে সরান, এক্ষুনি সরান।”

জবাবে সারজিস আলম বলেন, “আমার জানামতে নাই।” তখন হাসিনুর বলেন, “আছে, আমি দেখায় দিচ্ছি আপনাকে। আপনি তো এখন আমাদেরই লোক। আপনি নওশাদ ভাইয়ের (বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক সম্পাদক নওশাদ জমির) এলাকায় আসছেন, আপনাকে ধন্যবাদ। আপনি আওয়ামী লীগের লোকগুলোকে সরান।”

হাসিনুর আরও বলেন, “জুলাই আন্দোলনে আপনার ভূমিকা আছে। আমরা চাই, আপনি বড় নেতা হবেন। কিন্তু আপনার ডানে-বাঁয়ে আওয়ামী লীগের লোকজন ঘুরছে।”

এর উত্তরে সারজিস আলম বলেন, “ভাই, আপনি এটা ভালো করে জানেন, যেদিন ওরা ফিরে এসে আপনাকে ধরবে, ওই দিন আমারও গলা কাটবে। এটা তো মানেন।”

পরে হাসিনুর বলেন, “ওরা যেন কোনোমতেই আপনার ছত্রচ্ছায়ায় পুনর্বাসন হতে না পারে।” জবাবে সারজিস বলেন, “এটা আমরা একসাথে করব।” এরপর তিনি হাসিনুরের সঙ্গে হাত মেলান এবং বলেন, “চলেন, আমরা সবাই একসঙ্গে চা খাব।”

সারজিস আলমের বক্তব্য

এ বিষয়ে সারজিস আলম মুঠোফোনে বলেন, “এইটা একদমই একটা প্ল্যান। ইনটেনশনালি এ রকম করেছে। সে ওখানকার বিএনপির একটা ছেলে। প্রথমে এসেই ওই কথা বলছে। আরেকজনকে ভিডিও করতে বলছে। মানে একটা লোক ঠিক করছে ভিডিও করতে। আমি বলছি, কে দেখায় দেন। বলে, আছে একজন। ওই যে ছিল, বাইক নিয়ে চলে গেল। আমরা ভজনপুরে গেছি ব্যারিস্টার সাহেবের (বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার) বাসার পাশে। সেখানে তো তাদের কিছু লোকজন আছে, ওরা হয়তো মনে করে যে কাউকে বিব্রত করাটা হইলো পলিটিকস। পরে আবার আমার সঙ্গে দাঁড়িয়ে চা-নাশতা খেয়েছে। সেখানে কিসের আওয়ামী লীগের লোক থাকবে? আমি আমার কমিটির লোকজন নিয়ে সেখানে গেছি।”

স্থানীয় প্রেক্ষাপট

ঘটনাটি ঘটেছে বিএনপির শক্তিশালী অবস্থান রয়েছে এমন একটি এলাকায়। সারজিস আলমের সঙ্গে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সম্পর্ক এবং তার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে এই ঘটনা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভাইরাল ভিডিওটি রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। সারজিস আলমের দাবি, এটি তাকে বিব্রত করার জন্য পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। তবে এই ঘটনা স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা।