Image description

দেশে আসা প্রবাসীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার ও আনার ক্ষেত্রে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, প্রবাসীরা দেশে এসে নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) ছাড়াই সর্বোচ্চ ৬০ দিন পর্যন্ত স্মার্টফোন ব্যবহার করতে পারবেন। তবে দেশে অবস্থানের মেয়াদ ৬০ দিনের বেশি হলে বাধ্যতামূলকভাবে হ্যান্ডসেটটি নিবন্ধন করতে হবে।

সোমবার সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বিটিআরসি, এনবিআর এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

সভা শেষে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিদেশ থেকে ফোন আনার ক্ষেত্রে যাত্রীদের সুবিধায় কিছু শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে:

বিএমইটি কার্ডধারী প্রবাসী: যাদের বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন কার্ড রয়েছে, তারা শুল্কমুক্ত সুবিধায় মোট তিনটি ফোন আনতে পারবেন। এর মধ্যে নিজের ব্যবহারের একটি এবং অতিরিক্ত দুটি নতুন ফোন আনা যাবে। চতুর্থ ফোনের ক্ষেত্রে নির্ধারিত শুল্ক দিতে হবে।

বিএমইটি কার্ডহীন যাত্রী: যাদের বিএমইটি কার্ড নেই, তারা নিজের ব্যবহৃত ফোনের পাশাপাশি শুল্কমুক্ত সুবিধায় অতিরিক্ত একটি নতুন ফোন আনতে পারবেন।

ভ্রমণকালে চোরাচালান রোধ এবং বৈধতা প্রমাণের জন্য মোবাইল ক্রয়ের মূল রসিদ বা কাগজ সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা যাত্রীদের ওপর চোরাচালান চক্রের চাপ এড়াতে এটি জরুরি।

বর্তমানে বৈধ পথে মোবাইল আমদানির শুল্ক প্রায় ৬১ শতাংশ। সরকার এই শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে কমানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যার ফলে বৈধ হ্যান্ডসেটের দাম কমবে। তবে আমদানি শুল্ক কমানোর পাশাপাশি দেশের স্থানীয় মোবাইল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর (১৩-১৪টি ফ্যাক্টরি) স্বার্থ রক্ষায় ভ্যাট ও শুল্ক কাঠামোতে সমন্বয় করা হবে, যাতে বিদেশি বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এ বিষয়ে এনবিআর ও বিটিআরসি দ্রুত কার্যক্রম শুরু করেছে।

বিদেশ থেকে কেসিং পরিবর্তন করে পুরোনো বা 'রিফাবলিশড' ফোন দেশে এনে ডাম্পিং করার প্রবণতা বন্ধে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে সরকার। ভারত, থাইল্যান্ড ও চীন থেকে আসা ফ্লাইটগুলোতে বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছে এবং বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে কাস্টমস অভিযান জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সভায় সিম ও হ্যান্ডসেটের নিরাপত্তা নিয়েও আলোচনা হয়। নিজের নামে নিবন্ধিত সিম অন্য কেউ অপরাধমূলক কাজে (অনলাইন স্ক্যাম, জুয়া বা সাইবার অপরাধ) ব্যবহার করছে কি না, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া, প্রস্তাবিত ‘টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ (সংশোধনী) ২০২৫’-এ গ্রাহকের ই-কেওয়াইসি এবং আইএমইআই তথ্যের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নতুন ধারা সংযোজন করা হয়েছে, যা তথ্য লঙ্ঘনকারীদের আইনের আওতায় আনবে।

গুজবে কান না দিয়ে সবাইকে সঠিক নিয়ম মেনে মোবাইল ফোন ও সিম ব্যবহারের আহ্বান জানানো হয়েছে।