ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর
খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে শেখ হাসিনার গভীর উদ্বেগ ও প্রার্থনা
বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অবস্থার অবনতি হওয়ায় দিল্লিতে নির্বাসনে থাকা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছেন বলে খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।
বার্তা সংস্থা আইএএনএস লিখেছে, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইমেইলে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেছেন।
খালেদা জিয়ার বর্তমান সংকটাপন্ন শারীরিক অবস্থা এবং তিনি যেখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন সেই হাসপাতালে নিরাপত্তা জোরদার করার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শেখ হাসিনা বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়েছেন শুনে আমি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। আমি প্রার্থনা করি তিনি যাতে সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।”
বাংলাদেশের রাজনীতিতে খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার পরিচিতি ‘দুই নেত্রী’ হিসেবে। বাংলাদেশের ৫৪ বছরের ইতিহাসে তারা দুজন মোট ৩০ বছরের বেশি সময় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। এক সময় তাদের বৈরী সম্পর্ক বিদেশি সংবাদমাধ্যমে ‘দুই বেগমের লড়াই’ হিসেবে চিত্রায়িত হত।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে ২০১৮ সালে খালেদা জিয়াকে দুর্নীতি মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। দুই বছর পর মহামারীর মধ্যে শর্তসাপেক্ষে সাজা স্থগিত করে তাকে সাময়িক মুক্তি দেন শেখ হাসিনা।
এরপর বেশ কয়েকবার খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। তার দল ও স্বজনরা চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিতে চাইলেও সে অনুমতি শেখ হাসিনার সরকার তখন দেয়নি। বরং খালেদার হাসপাতালে যাওয়া নিয়ে প্রকাশ্য সংবাদ সম্মেলনে কটাক্ষও করেছেন শেখ হাসিনা।
২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় খালেদা জিয়ার বিএনপি সরকারকে দায়ী করেন আওয়ামী লীগ নেতারা। অন্যদিকে বিএনপি নেতারাও খালেদা জিয়ার অসুস্থতার জন্য শেখ হাসিনাকে দায়ী করেন।
২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার টানা ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়; তিনি পালিয়ে ভারতে চলে যান। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার পুরোপুরি মুক্তি মেলে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দুর্নীতি মামলার দায় থেকেও তাকে খালাস দেয় আদালত।
আন্দোলন দমাতে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। এছাড়া প্লট দুর্নীতির অভিযোগে আরো দুটো মামলায় তার সাজার রায় এসেছে।
অন্যদিকে ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে হৃদযন্ত্রের জটিলতা, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির সমস্যাসহ নানা দীর্ঘস্থায়ী রোগে ভুগছেন। গত ২৩ নভেম্বর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে তার ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ে।
তখন তেকেই তিনি হাসপাতালে সিসিইউতে ভর্তি। তার অবস্থা সংকটজনক বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন। স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল তার চিকিৎসা তত্ত্বাবধান করছে।
উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা হলেও নতুন করে পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় এখনো তা সম্ভব হয়নি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের চেয়ারপারসনকে বিদেশে নেওয়ার বিষয়টি এখন নির্ভর করছে তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতি, উড়োজাহাজে ভ্রমণের মত শারীরিক সক্ষমতা এবং মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্তের ওপর।
উল্লেখিত তথ্যের ভিত্তিতে ছোট ও আকর্ষণীয় শিরোনামসহ বাংলা অনলাইন পোর্টালের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সকল তথ্য রেখে নিউজ ফরমেটে সম্পাদনা প্রয়োজন।




Comments