Image description

সাম্প্রতিক সময়ে রংপুরে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে অপরাধের মাত্রা। গত তিন মাসে মহানগরীসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ১৩টি হত্যা ও ৩৭টি ধর্ষণের তথ্য পাওয়া গেছে। রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় এ তথ্য জানান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খ্রিস্টফার হিমেল রিছিল।

খ্রিস্টফার হিমেল রিছিল জানান, সব মিলিয়ে গত তিন মাসে জেলায় মোট ৮৯৯টি অপরাধের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘রংপুর জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের তুলনায় অবনতির দিকে যাচ্ছে। বিশেষ করে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং ধর্ষণের ঘটনা আমাদের গভীরভাবে ভাবিয়ে তুলেছে।’

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, ‘অপরাধের ঊর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি তৈরি করেছে। হত্যা, ধর্ষণ ও নারী-শিশু নির্যাতনের মতো গুরুতর অপরাধের ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক বাড়ছে। সচেতন মহলের আশঙ্কা, দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হলে পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে।’

এ সময় সভায় উপস্থিত আইনজীবী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা অপরাধ প্রতিরোধে কঠোর আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন।

রংপুরের সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানা বলেন, ‘ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীদের জন্য চিকিৎসা ও মানসিক সহায়তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি মানসিক পুনর্বাসন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভুক্তভোগীরা যেন ভয় বা লজ্জার কারণে চিকিৎসা ও আইনি সহায়তা থেকে বঞ্চিত না হন, সে বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।’

এদিকে রংপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ এনামুল আহসান বলেন, ‘অপরাধ দমনে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সমন্বিতভাবে কাজ করছে। অপরাধীদের কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতিতে রয়েছে।’

জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফাত হুসাইন বলেন, ‘অপরাধ দমনে পুলিশের টহল কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে বিশেষ নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ।’