ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশের শীর্ষস্থানীয় দুই গণমাধ্যম ‘প্রথম আলো’ ও ‘দ্য ডেইলি স্টার’ কার্যালয়ে নজিরবিহীন হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গভীর দুঃখ ও লজ্জা প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারায় নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে তিনি বলেছেন, এই লজ্জায় তার ‘মাটির নিচে ঢুকে যেতে’ ইচ্ছে করছে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক আবেগঘন পোস্টে তিনি এই অনুশোচনা প্রকাশ করেন।
পোস্টে শফিকুল আলম লেখেন, ‘গতকাল রাতে দ্য ডেইলি স্টার ও প্রথম আলোর সাংবাদিক বন্ধুদের কাছ থেকে আমি বারবার আতঙ্কিত ও কান্নাজড়ানো সাহায্যের ফোনকল পেয়েছি। আমার সকল বন্ধুদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আমি গভীরভাবে দুঃখিত যে আমি আপনাদের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থ হয়েছি। সাহায্য সংগঠিত করার জন্য যথাযথ ব্যক্তিদের কাছে আমি অসংখ্য ফোন করেছি, কিন্তু সেই সহায়তা সময়মতো পৌঁছায়নি।’
একজন সাবেক সাংবাদিক হিসেবে সহকর্মীদের এমন বিপদে কার্যকর ভূমিকা রাখতে না পারায় ব্যথিত শফিকুল আলম আরও লেখেন, ‘আপনাদের সান্ত্বনা দেওয়ার মতো ভাষা আমার জানা নেই। আমি শুধু এটুকুই বলতে পারি আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। যদি লজ্জায় আমি মাটির নিচে ঢুকে যেতে পারতাম, তবে এমনটাই করতাম। আমার এখন এমনই অনুভূতি হচ্ছে।’
বিবৃতিতে প্রেস সচিব জানান, হামলার সময় ভবনের ভেতরে অনেক সাংবাদিক আটকে পড়েছিলেন। তিনি লেখেন, ‘ডেইলি স্টারের ভেতরে আটকে পড়া সব সাংবাদিক উদ্ধার হওয়া এবং তারা নিরাপদে আছেন এমন খবর পাওয়ার পর ভোর ৫টার দিকে আমি ঘুমাতে যাই। কিন্তু ততক্ষণে এই দুইটি সংবাদমাধ্যম দেশের ইতিহাসে সংবাদপত্রের ওপর সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়।’
উল্লেখ্য, গত রাতে একদল উগ্র জনতা সংবাদমাধ্যম দুটির কার্যালয়ে চড়াও হয়ে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনার পর থেকেই সাংবাদিক সমাজ ও সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানানো হচ্ছে। সরকার এই হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দিয়েছে। প্রেস সচিবের এই পোস্টটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে।




Comments