Image description

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর পর সারাদেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঠেকাতে ব্যর্থতার দায়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছে ১৬টি নাগরিক সংগঠন।

শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়। বিবৃতিতে হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করার পাশাপাশি তার হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করা হয়। সংগঠনগুলোর মধ্যে রয়েছে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি, ব্রেইন, ক্ষুব্ধ নারী সমাজ, সম্প্রীতি যাত্রা, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক, নারীর রাজনৈতিক অধিকার ফোরাম, জনভাষ্য, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, বিক্ষুব্ধ থিয়েটারকর্মীগণ, টেক গ্লোবাল ইন্সটিটিউট, বটতলা–এ পারফর্মেন্স স্পেস, নারীপক্ষ, এএলআরডি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক, ভয়েজ ফর রিফর্ম এবং নাগরিক কোয়ালিশন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনে হাদির ওপর সশস্ত্র হামলা হয়। তিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে আপসহীন ভূমিকা পালন করেছেন। চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়ার পর ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। এ হত্যাকাণ্ডকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অশনিসংকেত হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ছায়ানট সাংস্কৃতিক ভবন, নালন্দা বিদ্যালয়, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ভবন এবং উদীচীর অফিসেও হামলার খবর পাওয়া যায়। এছাড়া ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দীপু চন্দ্র দাস নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার পর তার লাশে আগুন দেওয়ার নৃশংস ঘটনা ঘটে। বান্দরবান, চট্টগ্রামসহ অন্যান্য এলাকায়ও সহিংসতার খবর আসে।

বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও অন্তর্বর্তী সরকার পুরোনো সরকারের অবশিষ্টাংশ ও বিভিন্ন শক্তির হাত থেকে নাগরিক নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। বিভাজনের রাজনীতি ও সহিংসতা জুলাই প্রজন্মসহ সবাইকে অনিরাপদ করে তুলেছে। সামাজিক মাধ্যমের কিছু ইনফ্লুয়েন্সার উসকানি দিলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কার্যকর ভূমিকা নেয়নি।

সংগঠনগুলোর দাবিগুলো হলো- হাদি হত্যার স্বচ্ছ তদন্ত ও জড়িতদের বিচার; দেশজুড়ে সন্ত্রাসী হামলা, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের তদন্ত; দীপু চন্দ্র দাস হত্যার বিচার; নির্বাচন সামনে রেখে নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত; স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতার দায়ে উপদেষ্টার পদত্যাগ; এবং উসকানিদাতাদের শাস্তি।

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতিশোধ নয়, ন্যায়বিচারের পথে অগ্রসর হতে হবে। সব রাজনৈতিক শক্তি ও সংগঠনকে এ ব্যাপারে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।