চাঁদাবাজি, হত্যা, দুর্নীতি দেশে মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে: ফয়জুল করিম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেছেন, দেশে চাঁদাবাজি, হত্যা, ধর্ষণ ও দুর্নীতি মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়েছে। চাঁদা না দেওয়ার কারণে নিরপরাধ মানুষ খুন হচ্ছে, সাংবাদিকদের ওপর হামলা হচ্ছে। তিনি বলেন, জনগণ পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন করেছে, কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে যদি লুটপাট, জুলুমবাজি, ধর্ষণ ও ব্যভিচার অব্যাহত থাকে, তবে জনগণ তা মেনে নেবে না।
বুধবার (১ অক্টোবর) বিকাল ৫টায় পটুয়াখালী শহীদ মিনারের সামনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত এক গণসমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। গণসমাবেশে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, জুলাই গণহত্যার দৃশ্যমান বিচার, জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিবাদের দোসর রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ এবং সংখ্যানুপাতিক পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানানো হয়। সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হয় বলে আয়োজকরা দাবি করেছেন।
গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পটুয়াখালী-১ আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী আলহাজ্ব মুফতি মোঃ হাবিবুর রহমান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির শায়েখে চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়জুল করিম। সমন্বয়ক আলহাজ্ব আব্দুল গণি হাওলাদার ও যুগ্ম সমন্বয়কারী মাস্টার মুহাম্মদ সিদ্দিকুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল) উপাধ্যক্ষ মাওলানা মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পটুয়াখালী-৪ আসনের প্রার্থী আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান, পটুয়াখালী-৩ আসনের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা মুফতি আবু বকর সিদ্দীক, জেলা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সভাপতি হাওলাদার মোঃ সেলিম মিয়া, সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা মোঃ নজরুল ইসলাম, সেক্রেটারি এইচ এম আব্দুল হাকিম, সদস্য আলহাজ্ব মাও. আবুল হাসান বোখারী, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদ জেলা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মাও. মো. আবু সাঈদ, জাতীয় শিক্ষা ফোরাম জেলা কমিটির সভাপতি মাও. মুহা. আনছার উল্লাহ আনছারী, জেলা ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক মো. আনছার উদ্দিন, ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি হাওলাদার মাও. আলী হাসান রুহানী এবং ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মুহাম্মদ মিরাজ হোসেন।
প্রধান অতিথি মুফতি ফয়জুল করিম বিএনপি ও আওয়ামী লীগের শাসনামলের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধান ভারতের হুবহু নকল। তিনি বলেন, “আমরা সংবিধানের বিরোধিতা করলে আমাদের রাষ্ট্রদ্রোহী বলা হয়। আমরা রাষ্ট্রদ্রোহী নই, আমরা ভারতের বিরুদ্ধে।” তিনি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেন, এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে বিএনপি বেশি লাভবান হবে। তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্টের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে ইসলামী সমমনা দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তিনি চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও সন্ত্রাসমুক্ত দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পটুয়াখালী-১, ৩ ও ৪ আসনে তিনজন প্রার্থী ঘোষণা করেছে। বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে প্রধান অতিথি এই প্রার্থীদের পরিচয় তুলে ধরে হাত পাখার প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন। আয়োজকদের দাবি, সমাবেশে ১০ হাজারের বেশি তৌহিদী জনতা অংশ নিয়েছেন।
Comments