Image description

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আমরা ভয় করি শুধু আল্লাহ তায়ালাকে। বাকি যাদের কথা বলেন, তাদেরকে আমরা কোনো পাত্তাই দিই না। তবে বিশ্বের সব শান্তিকামী দেশকে আমরা সম্মান জানাই। কিন্তু কেউ যেন আমাদের ওপর কোনো দাদাগিরি করতে না আসে। আমরা আর কারও দাদাগিরি দেখতেও চাই না। বরদাশত করতেও রাজি নই। বাংলাদেশ চলবে আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ মোতাবেক। এই দেশের জনগণের পছন্দের বাইরে কারো পছন্দ-অপছন্দের কথা আমরা শুনতে চাই না।’

শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে ইসলামী ও সমমনা আট দলের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন তিনি।

জামায়াত আমির বলেন, আজকে রাস্তাঘাটে, হাটেবাজারে, নগরে বন্দরে সব জায়গায় মুক্তি-পাগল মানুষ। তারা জানিয়ে দিচ্ছে আগামীতে তারা কোথায় ভোট দেবে। তারা এখন আর কারো রক্তচক্ষুকে পরোয়া করছে না। কেউ কেউ আমাদেরকে অন্যদের রক্তচক্ষুর ভয় দেখান। অমুক শক্তি, তমুক শক্তি, অমুক দেশ, তমুক দেশ। তাদেরকে পরিষ্কার বলি—ইসলামী এবং দেশপ্রেমিক নেতাকর্মীরা হাসি হাসি যেখানে ফাঁসি বরণ করতে পারে, মেহেরবানি করে তাদেরকে কোনো কিছুর ভয় দেখাবেন না। আমরা ভয় করি শুধু আল্লাহ তায়ালাকে। বাকি যাদের কথা বলেন, তাদেরকে আমরা কোনো পাত্তাই দিই না।

তিনি বলেন, ‘যারা অন্যদের তল্পিবাহক হবে, তাদেরকে বলব, আগে যারা তাবেদারি করেছে, তাদের থেকে মেহেরবানি করে একটু শিক্ষা গ্রহণ করুন। যারা গিয়ে তাদের পেটে আশ্রয় নিয়েছে, এটা অখাদ্য। এরা ওখানে গিলতেও পারছে না, ফেলতেও পারছে না-এই পর্যায়ে এসে গেছে। আপনারা যাবেন কোথায়? আপনারা এই দেশে থাকেন। এই দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করেন।’

ফ্যাসিস্টরা দেশ থেকে পালালেও ফ্যাসিজমের কালো ছায়া এখনো কাটেনি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, একদল অপকর্ম করে পালিয়েছে, আরেকদল সেই অপকর্মের দায় কাঁধে তুলে নিয়েছে। কেউ চাঁদাবাজি করে জনগণের ক্ষোভের কারণ হয়েছে, আবার কেউ আরও বেশি শক্তি নিয়ে একই কাজ করছে।

জামায়াতের আমির বলেন, একদল দখলদার হয়ে জনগণের ঘৃণা কুড়িয়েছে, আরেকদল বেপরোয়া দখলদার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। একসময় বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের, আলেম-ওলামাকে জেল, নির্যাতন, ফাঁসি ও দেশছাড়া করার যে প্রবণতা ছিল, সেটি এখনো থামেনি।  যারা এতদিন নির্বাচনের জন্য নির্বাচন নির্বাচন করে জনগণকে বেহুশ করে তুলেছিল। এখন তারা ভিন্ন সুরে কেউ কেউ কথা বলতে শুরু করেছে। এ লক্ষ্মণ ভালো নয়।

নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ তাদেরকে আগামী নির্বাচনে লালকার্ড দেখানোর জন্য প্রস্তুত হয়ে গেছে। এই লালকার্ড দেখা থেকে বাঁচতে গিয়ে যদি কেউ আগামী নির্বাচনকে ভণ্ডুল করার চেষ্টা করে, আমরা মহান আল্লাহর ওপর ভরসা করে বলছি, তাদের সব ষড়যন্ত্র এ দেশের সংগ্রামী জনগণ ভণ্ডুল করে দেবে, ইনশাআল্লাহ। তা ছাড়া, কেউ যদি চিন্তা করে বাঁকা পথে প্রশাসনিক ক্যু’র মাধ্যমে নির্বাচনের ক্রেডিট হাইজ্যাক করবে। তাদেরকে বলবো বন্ধু, সেই সূর্য ডুবে গেছে, এই সূর্য আর বাংলাদেশে উঠবে না। কালো সূর্য বাংলাদেশের মুখ দেখবে না। এখন নতুন সূর্যের উদয় হবে।

জোটের বাইরে থাকা ইসলামী দলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আমি বন্ধুদেরকে অনুরোধ করব, সব জাল ছিন্ন করে আপনারা আপনাদের আঙিনায় চলে আসুন। এই আঙিনা আপনাদের আঙিনা। এখন যেখানে ঘোরাফেরা করছেন, এটা আপনাদের আঙিনা না। তাদের সঙ্গে আপনাদেরকে মানায় না। আপনারা বড় বেমানান হয়ে গেছেন। আপনারা ঘরের ছেলে ঘরে চলে আসুন। আমরা আপনাদেরকে বুকে জড়িয়ে কবুল করব, অভিনন্দন জানাবো, ইনশাআল্লাহ।