Image description

দ্য ডেইলি স্টার ও প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, এ ধরনের সহিংসতা অগ্রহণযোগ্য এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও ভবিষ্যতের জন্য গুরুতর হুমকি। রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে দ্য ডেইলি স্টারের কার্যালয় পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।

জোনায়েদ সাকি বলেন, সংবাদমাধ্যমের ওপর এই হামলা পরাজিত ফ্যাসিবাদী শক্তিদের সহিংস প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতা, যারা জুলাই আন্দোলনের পর একটি গণতান্ত্রিক ও সহনশীল বাংলাদেশ গড়ে উঠতে দিতে চায় না। এই শক্তিগুলো দেশের মধ্যে ভয় ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়, যেন দেখানো যায় বাংলাদেশ তাদের ছাড়া চলতে পারে না।

শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওসমান হাদি মারা গিয়েছেন, কারণ তিনি নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। এই হত্যাকাণ্ড গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা ব্যাহত করার প্রচেষ্টা। যখন পুরো দেশ ওসমান হাদির হত্যায় শোক ও প্রতিবাদ প্রকাশ করছিল, তখন কিছু গোষ্ঠী জনগণের ক্ষোভকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে গণমাধ্যমের ওপর হামলা চালায়।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেখেছি সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর কার্যালয়েও হামলা হয়েছে। এগুলো জুলাই আন্দোলনের সময় গড়ে ওঠা একতা ভাঙার চক্রান্ত। সাকি সতর্ক করেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ড দেশে আবারও বিভাজনের রাজনীতি চালুর চেষ্টা, যা অতীতেও দেশের ক্ষতি করেছে এবং সামনে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক লক্ষ্যে পৌঁছাতে বাধা দেবে।

‘নাগরিকদের রাজনৈতিক মতামত ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু সবাইকে বাংলাদেশে একসঙ্গে বসবাস করতে হবে। আর যারা অপরাধ করেছে, তাদের ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’

তিনি অভিযোগ করেন, জুলাই আন্দোলনের সময় এবং পরে হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত অনেকেই ভারতে আশ্রয় নিয়েছে এবং সেখান থেকে দেশকে অস্থিতিশীল করার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে এবং সহিংসতা রোধে ব্যর্থ হয়েছে। হত্যাকারীরা পালিয়ে যাচ্ছে আর নতুন হত্যাকাণ্ড ঘটছে। এটি সরকারের বড় ব্যর্থতা।

তার দাবি, যারা দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ তাদের পদত্যাগ করা উচিত। এসময় তিনি ওসমান হাদি ও জুলাই শহিদদের হত্যাকারীদের দেশে ফিরিয়ে এনে সঠিক বিচারের ব্যবস্থা করা জরুরি বলে মন্তব্য করেন।

নির্বাচন না হলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি হবে উল্লেখ করে সাকি বলেন, যারা নির্বাচনে বাধা দেওয়ার বা এমন পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে, তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে।

ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং স্বার্থপর গোষ্ঠীগুলোর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও জনক্ষোভকে অপব্যবহারের প্রচেষ্টাকে প্রতিরোধ করতে হবে।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক সমাজে সাংবাদিকদের সমালোচনা বৈধ, মানুষ নতুন মিডিয়া প্রতিষ্ঠার অধিকার রাখে। কিন্তু গণমাধ্যম অফিস জ্বালানো এবং সহিংসতার মাধ্যমে ভয় সৃষ্টি করা কখনোই যুক্তিসঙ্গত নয়।

সাকি আরও বলেন, যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা চালাচ্ছে, তারা স্পষ্টতই অপরাধ করছে এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের সঙ্গে খেলছে, যা পুরো দেশের জন্য বিপজ্জনক। তিনি সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে এ ধরনের কার্যক্রম প্রত্যাখ্যান ও একসাথে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান।