Image description

বিএনপির দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) জামায়াত জোটের অংশ হয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল ঝড় তুলেছেন। কেন এতোদিনের মিত্রদের ছেড়ে জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হলেন অলি, এ নিয়ে চলছে নানান আলোচনা। মূলত আসন সমঝোতা না হওয়ায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত জোটে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এলডিপি। এলডিপির অভিযোগ, বিএনপি থেকে তাদের ‘অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।’

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিকাল ৫টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয়তলার আবদুস সালাম হলে এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াত জোটে এলডিপির  যোগ দেওয়ার বিষয়টি জানান জামায়াত আমির। সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেন এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদও। 

এর আগে গত শনিবার দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্যদের দীর্ঘ বৈঠক শেষে সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ। 

অলি আহমদ জানান, ১৪ জনের শর্টলিস্ট দিয়েও আলোচনায় বসেনি বিএনপি। এলডিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, জোটগত সমঝোতার লক্ষ্যে বিএনপিকে ১৪ জনের একটি শর্টলিস্ট দেওয়া হয়েছিল। তবে ওই তালিকা থেকে কাউকে দিতেই হবে—এমন কোনো বাধ্যবাধকতা ছিল না।

তিনি বলেন, আমরা বলেছিলাম, ১৪ জনের মধ্য থেকে যাদের উপযুক্ত মনে হবে, অন্তত ৮-১০ জনকে বিবেচনায় নিলেই আমাদের দল টিকে থাকবে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির মহাসচিবের নেতৃত্বে গঠিত সাত সদস্যের কমিটির সঙ্গে এলডিপির কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয়নি, এলডিপির নেতারা দুই ঘণ্টা বিএনপি কার্যালয়ে অপেক্ষা করলেও আলোচনা হয়নি, কেবল অনানুষ্ঠানিকভাবে এককভাবে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।
‘শর্টলিস্টটি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের কাছে পাঠানো হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।’

এলডিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, বিএনপি যেখানে শত শত আসনে প্রার্থী দিয়েছে, সেখানে আমাদের মাত্র একটি কার্যকর আসন দেওয়া হয়েছে। এটা আমাদের জন্য চরম অবমূল্যায়ন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দল চান্দাবাজি করে না। দলের নেতারাই নিজের পকেটের টাকা খরচ করে এত বছর দল চালিয়ে এসেছে। অথচ শেষ পর্যন্ত দেখা গেল ছাগল আর গরুর দাম একই।

এলডিপি দাবি করে, বিএনপির সংকটকালে তাদের নেতারা পাশে ছিলেন, কিন্তু এখন দীর্ঘ সময় ধরে কোনো যোগাযোগ নেই।

বিএনপির সঙ্গ ছাড়ার পথপরিক্রমা নিয়ে কর্নেল অলি জানান, দীর্ঘ প্রায় চার ঘণ্টার বৈঠক শেষে দলের তৎকালীন মহাসচিব ড. রিদওয়ান আহমদ প্রস্তাব দেন—এলডিপি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এককভাবে অংশ নেবে। এই প্রস্তাবে উপস্থিত সব প্রেসিডিয়াম সদস্য একমত হন এবং লিখিতভাবে সিদ্ধান্তে স্বাক্ষর করেন। কিন্তু তিনিই বিএনপিতে যোগ দিয়ে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট করছেন।