
শেরপুর ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে এক রোগীর স্বজন ডাক্তারকে ‘আপু’ ডাকায় উত্তেজিত হয়ে ওই রোগীর অভিভাবকসহ রোগীকে তার কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মারজিয়া খাতুন কক্ষ থেকে তাদের বের করে দেন।
অভিযোগকারী রোগীর স্বজন শহরের নয়নী বাজার মহল্লার কাজী মাসুম জানান, বেলা ২টার দিকে তার ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস মামিয়ার প্রচণ্ড পেট ব্যথা নিয়ে জেলা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। এসময় কর্তব্যরত ডাক্তার অনন্যা তাকে জরুরি কিছু ওষুধ লিখে দেন। হাসপাতালে ওষুধগুলো না পেয়ে বাইরে বিভিন্ন দোকানে খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে একটি ওষুধ না পেয়ে প্রায় আধা ঘণ্টা পর আবারও জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসারের কক্ষে প্রবেশ করে দেখেন আগের ডাক্তার অনন্যা ডিউটি শেষ করে চলে যাওয়ায় পরবর্তী ডিউটিতে আসেন ডাক্তার মারজিয়া খাতুন।
কাজী মাসুমের অভিযোগ, এসময় রোগীর অভিভাবক বিনয়ের সাথে ডাক্তার মারজিয়াকে আপু সম্মোধন করে বলেন, ‘আগের ডাক্তার যে ওষুধটি দিয়েছিল, সে ওষুধটি পাওয়া যাচ্ছে না। অন্য কোনো ওষুধ দেওয়া যায় কিনা।’ এ কথা শুনেই ডাক্তার মারজিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে বলেন, ‘আপু বলছেন কেন, আমি মেডিকেল অফিসার। যান বের হয়ে যান।’
হতভম্ব ওই রোগীর অভিভাবক বলেন, ‘আপু ডেকে কী দোষ করেছি। কিন্তু এতে আরও রাগান্বিত হয়ে কয়েক দফা তাকে ধমক দিয়ে তার রুম থেকে বের করে দেয়।’
এদিকে, ঘটনাটি জানার পর বেলা তিনটার দিকে জেলায কর্মরত কয়েকজন সংবাদকর্মী সরাসরি ওই ডাক্তারের কক্ষে আসেন বিষয়টি বিস্তারিত জানার জন্য। এসময় তিনি বলেন, ‘আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ছাড়া কারো সঙ্গে কোনো কথা বলব না।’
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার তাহেরাতুল আশরাফি মোবাইল ফোনে বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি, হয়তো ভুলক্রমে তিনি এ কথা বলেছেন। তবে, আমাদেরকে অফিসিয়ালি অভিযোগ বা সরাসরি কথা বললে শনিবার আসতে হবে। আর মিউচ্যুয়াল করতে চাইলে তার সাথে সরাসরি কথা বলতে পারেন।’
অপরদিকে, হাসপাতালে জরুরি বিভাগের ডাক্তারদের এহেন আচরণে উপস্থিত অনেক রোগী এবং তার অভিভাবকরা একই অভিযোগে তুলেন ওই ডাক্তারের বিরুদ্ধে। তারা জানান, শুধুই এই মারজিয়াই নয় হাসপাতালে কর্তব্যরত যত ডাক্তার আছে তাদের মধ্যে প্রায় সবাই এমন আচরণ করেন রোগী এবং তার অভিভাবকদের সাথে।
জেলা সিভিল সার্জন মুহাম্মদ শাহীন বলেন, ‘বিষয়টি দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। এ ধরণের কথা বা রুম থেকে কাউকে বের করে দেওয়া উচিত নয়। হাসপাতালে গ্রাম থেকে শহর সব পর্যায়ের লোকজন আসবে, তাদের সাথে খারাপ ব্যবহারের সুযোগ নেই।’
Comments