
আসন্ন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ এবং সিনেট-এ ছাত্র প্রতিনিধি-২০২৫ নির্বাচনকে ঘিরে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা এখন তুঙ্গে। শুক্রবারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও থেমে থাকেনি নির্বাচনী কার্যক্রম। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন হল, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, শহীদ মিনারসহ ক্যাম্পাসের বাইরে বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় প্রার্থীরা তাদের প্যানেল এবং নিজেদের জন্য ভোট চেয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
প্রার্থীরা লিফলেট বিতরণ ও সরাসরি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে নিজেদের ইশতেহার বলার মাধ্যমে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন। শুক্রবার ছুটির দিনে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি তুলনামূলক কম থাকলেও প্রার্থীরা ভোটারদের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে সচেষ্ট থাকেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, প্রার্থীরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন আবাসিক হল-মসজিদ, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও শহীদ মিনার ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টের পাশাপাশি ক্যাম্পাসের আশপাশের আবাসিক এলাকাগুলোতেও প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিশেষ করে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও সমন্বয়কদের সমর্থিত প্যানেলকে বিনোদপুর, মির্জাপুর, কাজলা ও মেহেরচন্ডীসহ বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় জুমার নামাজের পর সক্রিয়ভাবে প্রচারণা করতে দেখা যায়।
প্রার্থীরা বলছেন, প্রতিটি মুহূর্ত এখন তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই ছুটির দিনেও তারা মাঠে থেকে ভোটারদের দোরগোড়ায় পৌঁছে সমর্থন আদায় করছেন। অন্যদিকে, শিক্ষার্থীরা জানাচ্ছেন, অবসর দিনে প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি নির্বাচনী উৎসবকে আরও প্রাণবন্ত করে তুলেছে। তবে সবাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্রচারণা চালানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন।
জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে প্রচার-প্রচারণা করতে দেখা যায় ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম'-কে। এ বিষয়ে প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী শেখ নূর উদ্দীন আবীর বলেন, ‘সকাল থেকে ক্যাম্পাসের আশেপাশের বিভিন্ন মেসে আমরা প্রচারণা চালিয়েছি। এখন আমরা জুমার নামাজের শেষে ক্যাম্পাসে প্রচারণা চালাচ্ছি। রাতে মেয়েদের কয়েকটা হলগুলোতে আমাদের প্রজেকশন মিটিং রয়েছে।'
এসময় 'আধিপত্যবিরোধী ঐক্য' প্যানেলকেও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন যায়গায় প্রচারণা করতে দেখা যায়। এ বিষয়ে জিএস পদপ্রার্থী সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, 'ক্যাম্পাসের আশেপাশে বিনোদনপুর, মেহেরচন্ডী, কাজলা, মির্জাপুরের কয়েকটা মসজিদে আমাদের টিম নামাজ শেষে প্রচারণা চালিয়েছে। এছাড়াও, সন্ধ্যায় মেয়েদের বিভিন্ন হলে আমাদের প্রজেকশন মিটিং রয়েছে৷ রাতে ছেলেদের হলেও প্রচারণা চালাবো।'
জুমার নামাজের পর কেন্দ্রীয় মসজিদ এবং ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্ট ছাড়াও ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলকে প্রচারণা করতে দেখা যায় বিভিন্ন আবাসিক এলাকাগুলোর মসজিদগুলোতে। কাজলায় একটি মসজিদে জুমার নামাজ শেষে প্রচারণার সময় শাখা ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, 'আমরা সকালে বিভিন্ন হলগুলোতে প্রচারণা চালিয়েছি। এখন আমরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে আশেপাশের বিভিন্ন আবাসিক এলাকা যেমন কাজলা, বিনোদপুর, মেহেরচণ্ডীর মতো এলাকাগুলোতে প্রচারণা চালাচ্ছি। রাতে আমরা বিভিন্ন মেসগুলোতে যাব প্রচারণার জন্য।'
এছাড়াও, কেন্দ্রীয় মসজিদে জুমা'র নামাজ শেষে প্রচারণা চালাতে দেখা যায় ছাত্র অধিকার সমর্থিত ‘রাকসু ফর র্যাডিকেল চেঞ্জ', বাম সমর্থিত ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ' প্যানেলসহ বিভিন্ন স্বতন্ত্র প্রার্থীকে। বিভিন্ন প্যানেলের ভিপি, জিএস, এজিএস প্রার্থীরা জানান ছুটির দিনে তারা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন, যাচ্ছেন শিক্ষার্থীদের মেসেও। তাদের প্রত্যাশা ২৫ তারিখে একটি সুষ্ঠু সুশৃঙ্খল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
উল্লেখ্য, দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাকসু নির্বাচন। নির্বাচন পূর্ববর্তী আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা চলবে ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ১০টা পর্যন্ত।
Comments