Image description

জনপ্রিয় বলিউড চলচ্চিত্র 'থ্রি ইডিয়টস'-এ আমির খান অভিনীত র‍্যাঞ্চো চরিত্রের বাস্তব অনুপ্রেরণা, পরিবেশ ও শিক্ষা অধিকারকর্মী সোনাম ওয়াংচুককে গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় পুলিশ। লাদাখকে পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে চলমান আন্দোলনে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে শুক্রবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে এনডিটিভি জানিয়েছে। এর আগে ওয়াংচুক বলেছিলেন, লাদাখের মর্যাদার জন্য তিনি 'যে কোনো সময় জেলে যেতে প্রস্তুত'।

এই গ্রেপ্তারের ঘটনাটি লাদাখে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ব্যাপক সংঘর্ষের মাত্র দুই দিন পর ঘটল, যেখানে চারজন নিহত এবং ৫০ জন নিরাপত্তাকর্মীসহ বহু মানুষ আহত হয়েছিলেন।

ওয়াংচুকের অলাভজনক সংস্থা 'স্টুডেন্ট এডুকেশন অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্ট অব লাদাখ'-এর নিবন্ধন এর আগে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাতিল করেছিল। মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ ছিল, তার প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে অর্থ সংগ্রহ করত। যদিও ওয়াংচুক সম্প্রতি এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, তার প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে সরাসরি কোনো অর্থ আনত না, তবে জাতিসংঘ, সুইস এবং ইতালীয় বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে তাদের বাণিজ্যিক লেনদেন ছিল, যার সব ট্যাক্স পরিশোধ করা হয়েছে। তিনি লাদাখের সাম্প্রতিক সংঘাতে কোনো উস্কানি দেওয়ার অভিযোগও অস্বীকার করেছেন।

কেন্দ্রীয় সরকার ওয়াংচুকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে যে, লাদাখের সাম্প্রতিক সহিংসতায় তিনি বিভিন্ন বিবৃতি দিয়ে উস্কানি দিয়েছেন। সরকারের দাবি, যখন অ্যাপেক্স বডি লেহ (এবিএল) এবং কার্গিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (কেডিএ) লাদাখের রাজ্য মর্যাদার বিষয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছিল, তখনো ওয়াংচুক তার অনশন থেকে সরে আসেননি। সরকার আরও অভিযোগ করেছে যে, আলোচনা থেকে ইতিবাচক ফলাফল আসা সত্ত্বেও কিছু ব্যক্তি আলোচনা নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছেন। ওয়াংচুকের অনশনের সময়ই লাদাখে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছিল।

কেন্দ্রীয় সরকার আরও অভিযোগ করেছে যে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর ওয়াংচুক তার অনশন ভেঙে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিজের গ্রামে চলে যান, কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি।

সোনাম ওয়াংচুক ২০১৮ সালে মর্যাদাপূর্ণ রামোন ম্যাগসেসে পুরস্কারে ভূষিত হন। তার গ্রেপ্তারের ঘটনা লাদাখের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যোগ করল এবং এ অঞ্চলের ভবিষ্যত নিয়ে জল্পনা আরও বাড়াল।