Image description

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে ভাষণ দেওয়া শুরু করেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তবে ভাষণ শুরুর আগ মুহুর্তে সভাকক্ষে হইচই শুরু হয়।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ শুরুর সময় অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। সিএনএন প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, ভাষণ দেওয়ার জন্য ডায়াসে যান নেতানিয়াহু। ওই সময় সামনের আসন ছেড়ে দল বেধে বেরিয়ে যান বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। এই সময় দর্শক সারিতে কেউ কেউ শিস বাজান। প্রতিবাদকারীদের কেউ কেউ হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানান। অধিবেশন পরিচালনাকারীরা প্রতিনিধিদের নীরবতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার অনুরোধ করেন। নেতানিয়াহু ভাষণ শুরু না করে কিছুক্ষণ চুপ থাকেন।

নিউ ইয়র্ক টাইমস প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় কক্ষের অধিকাংশ আসনই খালি ছিল। গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে বিশ্বনেতাদের পক্ষ থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে এটি ছিল সবশেষ প্রকাশ্য প্রতিবাদ।

বক্তব্যে নেতানিয়াহু গাজায় হামাসের ওপর হামলার পক্ষে সাফাই গান। তিনি বলেন, ‘কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান চলবে।’ ফিলিস্তিনকে বিভিন্ন দেশের স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদও জানান নেতানিয়াহু। বলেন, ‘এটি আপনাদের সবার জন্য লজ্জার চিহ্ন হয়ে থাকবে। ফিলিস্তিনকে আলাদা রাষ্ট্রে হতে দিয়ে ইসরায়েলিরা আত্মহত্যা করতে চায় না।’

নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় নিউ ইয়র্ক সিটির সড়কেও প্রতিবাদ হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা শুক্রবার সকালে টাইমস স্কোয়ারে জড়ো হন। তারা ফিলিস্তিনের পতাকার পাশাপাশি প্ল্যাকার্ড বহন করেন। এতে লেখা ছিল, ‘ইসরায়েলকে দেওয়া মার্কিন সহায়তা বন্ধ করো’, ‘নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করো’, এবং ‘এখনই গাজাকে অনাহার থেকে মুক্ত করো’।

গাজায় যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত থেকে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আছে। তবে ভাষণে নেতানিয়াহু বলেন, তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সত্য নয়। গাজাবাসী যদি যথেষ্ট খাবার না পেয়ে থাকে তাহলে সেটির জন্য হামাস দায়ী। 

সম্প্রতি জাতিসংঘের একটি তদন্ত সংস্থা জানিয়েছে, ইসরায়েল গাজা সিটিতে গণহত্যা চালাচ্ছে। ভাষণে এই অভিযোগও অস্বীকার করেন নেতানিয়াহু। বলেন, ইসরায়েল কোনো গণহত্যা চালাচ্ছে না। গাজার বাসিন্দাদের আগেই সরে যেতে বলা হয়েছে।

ভাষণে নেতানিয়াহু আরও বলেন, হামাস যদি ইসরায়েলের দাবি মেনে নেয় এবং নিরস্ত্র হয় তাহলে শিগগিরই গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ বন্ধ হবে।

হামাস বরাবরই নিজেদের বেসামরিকীকরণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারা বলেছে, যুদ্ধ বন্ধের জন্য তারা প্রয়োজনে সব জিম্মিদের মুক্তি দিতে রাজি। তবে একই সঙ্গে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার ও বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দিতে হবে।