Image description

আজ বিশ্ব ডাক দিবস। 
রানার/জানা-অজানার বোঝা আজ তার কাঁধে/বোঝাই জাহাজ রানার চলেছে চিঠি আর সংবাদে সুকান্ত ভট্টাচার্যের লেখা বিখ্যাত এ ‘রানার’ কবিতার রানার এখন আর ছুটে চলে না। 
তবে ময়মনসিংহের গৌরীপুরের ডাকঘরগুলোর চিঠির বাক্সে আগের মতো আর প্রেমের চিঠি না আসলেও বিচ্ছেদের চিঠি আসে নিয়মিত।

উপজেলা ডাকঘর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পৌর শহরের খেলার মাঠ সংলগ্ন রয়েছে কেন্দ্রীয় ডাকঘর। তার অধীনে রয়েছে ভবানীপুর, রামগোপালপুর, কিল্লা তাজপুর, গিধাঊষা, মাওহা, বীর আহম্মদপুর, ভূটিয়ারকোনা, মুখুরিয়া, পাছার বাজার, শাহগঞ্জ, লামাপাড়া, ডৌহাখলা ও সাখুয়া মাঝেরচর শাখা ডাকঘরগুলো।

রাস্তার পাশে কেন্দ্রীয় ডাকঘরের সামনের ডাকবাক্সটি চার বছর পূর্বে গাড়ি দূর্ঘটনায় ভেঙ্গে যায়। এরপর আর প্রতিস্থাপন করা হয়নি। এই চিত্রেই ফুটে উঠে বর্তমানে ডাকঘরের কদর একেবারেই কমে গেছে। প্রযুক্তির যুগে ইমেইল, মোবাইল মেসেজ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে চিঠির কাগজের সুবাস, হারিয়ে যাচ্ছে অপেক্ষার মিষ্টি অনুভব।

গৌরীপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়, পুরোনো চিঠির বক্সগুলো এখনও টিকে আছে লাল রঙে বিবর্ণ, মরিচা পড়া অবস্থায়। ডাকবাক্সগুলোতে নেই চিঠি, নেই প্রিয়জনের হাতের লেখা কোনো বার্তা।

স্থানীয় বাসিন্দা আরিফ আহমেদ জানান, একসময় এই ডাকবাক্সে প্রতিদিন চিঠি ফেলতেন মানুষ। প্রেমপত্র, পারিবারিক খবর, চাকরির আবেদন, সবই আসত ডাকের মাধ্যমে। এখন সেই চিঠির জায়গা নিয়েছে ইনবক্সের নোটিফিকেশন।

গৌরীপুর পাবলিক কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম মিন্টু জানান, আমরা যখন স্কুল-কলেজে পড়তাম তখন মোবাইল ছিলো না, চিঠিই ছিলো একমাত্র ভরসা। বাড়িঘরে খোঁজ-খবরে নেওয়া, বন্ধু-বান্ধবের সাথে যোগাযোগ করার একমাত্র মাধ্যমই ছিলো চিঠি। যা আবেগে ভরপুর ছিলো। ডাকহরকরা চিঠি নিয়ে আসলে আমরা খুব উচ্ছ্বসিত হতাম। কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল হয়ে যাওয়ায় মানুষের মাঝে কোন আবেগ নেই।

রামগোপালপুর ডাকঘরের পোস্টমাস্টার মোঃ আব্দুছ ছাত্তার বলেন, ডাকঘর এখনও সক্রিয়, তবে চিঠি পাঠানোর হার কমে গেছে আশঙ্কাজনকভাবে। ব্যক্তিগত চিঠি কম আসলেও সরকারি অফিস-আদালতের চিঠি, চাকরির ইন্টারভিউ কার্ড, এনজিও’র চিঠিপত্রই আসে। এখন মূলত পার্সেল ও অফিসিয়াল ডকুমেন্ট নিয়েই তাদের কাজ বেশি।

উপজেলা ডাকঘরের পোস্টমাস্টার বাবুল চন্দ্র দাস বলেন, ডাকঘরে আগের মতো ব্যক্তিগত চিঠি কম আসলেও নিয়মিত ডিভোর্সের চিঠি আসে। চিঠি আদান প্রদানের বাইরে আমাদের ডাক বিভাগে ডাক জীবন বীমা চালু রয়েছে। 

ডাক বিভাগের প্রকল্পের মাধ্যমে এই উপজেলায় ১৩টি শাখা ডাকঘর চালু রয়েছে। আমাদের জনবল সংকট থাকায় আমরা যথাসময়ে মানুষের কাছে আমাদের ডাক পৌঁছাতে পারিনা। 

এছাড়াও উপজেলা ডাকঘর থেকে সরকারিভাবে ২টি ব্যাচে ৩০ জন করে ৬ মাস মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন সফটওয়্যার এপ্লিকেশন কোর্স করানো হয়।