সিরাজগঞ্জের চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন উপজেলায় এবার ভুট্টা চাষের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে কৃষকদের মধ্যে। আগাম জাতের ভুট্টা চাষে ইতোমধ্যেই প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে বীজ রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। চলতি মৌসুমে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ভুট্টা চাষ হবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় মোট সাড়ে ১৪ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। রোপা আমন ধান কাটার পরই কাজিপুর, তাড়াশ, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ, কামারখন্দ, বেলকুচি ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ভুট্টা চাষ শুরু হয়। জনপ্রিয় জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে এম-৯০০, এনকে-৪০, পাইনিয়া এবং আগাম জাতের ভুট্টা। বিশেষ করে যমুনা নদীর তীরবর্তী ৫টি উপজেলার বিশাল চরাঞ্চলে ভুট্টা চাষ সর্বাধিক।
স্থানীয় কৃষকদের মতে, ধানের তুলনায় ভুট্টা চাষে ব্যয় কম এবং লাভ বেশি হওয়ায় কৃষকেরা এ চাষে ঝুঁকে পড়ছেন। সারিবদ্ধভাবে বীজ রোপণ, তুলনামূলক কম পরিচর্যা, এবং চরাঞ্চলের উপযোগী মাটি—সব মিলিয়ে ভুট্টা এখন লাভজনক ফসলের শীর্ষে। প্রতি বিঘায় গড় উৎপাদন ২৭–২৮ মণ পর্যন্ত হয়। ভুট্টার দানা ছাড়াও এর পাতা গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং গাছ জ্বালানি হিসেবেও কাজে লাগে—যা অতিরিক্ত অর্থনৈতিক সুবিধা এনে দেয়।
ইতোমধ্যেই রোপণকৃত ভুট্টার চারা গজাতে শুরু করেছে এবং কৃষকেরা পরিচর্যায় ব্যস্ত। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই জেলার সকল এলাকায় বীজ রোপণ সম্পন্ন হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এ কে এম মঞ্জুরে মওলা বলেন, কৃষকদের আরও উৎসাহিত করতে মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ ও আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। তিনি জানান, ইতোমধ্যে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা রোপণ সম্পন্ন হয়েছে।
কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক আবহাওয়া ও পরিচর্যা পেলে চলতি মৌসুমে সিরাজগঞ্জে ভুট্টার উৎপাদন নতুন রেকর্ড গড়তে পারে।




Comments