Image description

ছাত্রশিবির করার কারণে জালিয়াতির অভিযোগ এনে মাস্টার্সের ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলামের। স্নাতকে তিনি ছিলেন ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট। ২০১৩ সালে স্থগিত হওয়া সেই ফল আজ প্রকাশ করা হয়েছে। এতে তিনি বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন এবং সিজিপিএ ৪ অর্জন করেছেন।

রফিকুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের ২০০৭-০৮ বর্ষের শিক্ষার্থী। ছাত্র জীবনে তিনি রাজশাহী মহানগর ছাত্রশিবিরের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে তিনি মদিনার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. মো. হাসনাত কবীর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রার্থী এমএসসি (থিসিস গ্রুপ) পরীক্ষা, ২০১২ (যা অনুষ্ঠিত হয়েছিল আগস্ট-নভেম্বর, ২০১৩ এবং সেপ্টেম্বর-নভেম্বর, ২০২৫ মাসে)’তে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হলো।

তিনি ফলাফলে সিজিপিএ ৪ (আউট অব-৪) পেয়েছেন। এটি অস্থায়ীভাবে প্রকাশ করা হয়েছে এবং সিন্ডিকেটে প্রতিবেদন সাপেক্ষে কার্যকর হবে। কোনো অসংগতি দেখা দিলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফলাফল সংশোধন বা বাতিল করার অধিকার সংরক্ষণ করে।

ফলাফল প্রকাশের পরে সাবেক এই শিবির নেতা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি ছিলাম আমার পরিবারের একমাত্র ছেলে।নিম্ন আয়ে আমার পরিবারের প্রথম প্রয়োজন ছিল আমার একটি ভালো ক্যারিয়ার। কিন্তু মাস্টার্সে শিক্ষকদের অন্তর্কোন্দল এবং আমার রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে আমার ওপর থিসিস জালিয়াতির অভিযোগ এনে ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়। এতে আমার পরিবার বড় ধরনের ধাক্কা খায়। আমি এই ঘটনার পরে দীর্ঘদিন ট্রমার (যন্ত্রণা) ভেতর ছিলাম। এক যুগ পরে আমার ফল প্রকাশ পাওয়া আমার জীবনের অন্যতম আনন্দঘন সংবাদ। আল্লাহর কাছে অনেক অনেক শুকরিয়া।’

রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি নানানভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছি। আমি আওয়ামী লীগের কর্মীদের হেনস্তার শিকার হয়েছি। সামাজিকভাবে বড় একটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে। আমি অনার্সে প্রথম শ্রেণিতে পাশ করেছি। কিন্তু মাস্টার্সের জন্য বাংলাদেশের কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারিনি।’

শিক্ষা জীবন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘২০১৫ সালের শেষের দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উইকেন্ড প্রোগ্রামে মাস্টার্স সম্পন্ন করি এবং সেখানেও আমার সিজিপিএ ৪ আসে। এরপর আমি মানারাতে কিছুদিন কাটাই এবং পরে চীনে গিয়ে মাস্টার্স করি। সেখানে পিএইচডি শুরু করার পর দেশে ফেরত আসি। জুলাই-আগস্টে আন্দোলনের মধ্যে হাসিনার পতনের পর আমি দেশে থেকে যাই। পরে চায়নাতে পিএইচডি ত্যাগ করে এখন আমি সৌদি আরবে কিং আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছি।’