Image description

থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে টানা বর্ষণে সৃষ্ট কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ত্রাণ ও চিকিৎসাসামগ্রী পৌঁছে দিতে একটি বিমানবাহী রণতরী প্রস্তুত করার কথা জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ওই অঞ্চলে আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

গতকাল বুধবার দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বন্যায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া অঞ্চলের একটি হাসপাতাল থেকে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের সরিয়ে নিতে হেলিকপ্টার পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। রয়টার্সের তথ্যমতে, বন্যায় থাইল্যান্ডের নয়টি ও প্রতিবেশী মালয়েশিয়ার আটটি প্রদেশ প্লাবিত হয়েছে। এতে উভয় দেশের প্রায় ৪৫ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মালয়েশিয়া সীমান্তঘেঁষা বাণিজ্যিক শহর হাতইয়াইতে একদিনেই ৩৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা শহরটির ৩০০ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। শহরজুড়ে যানবাহন ও বাড়িঘর পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অনেক বাসিন্দা বাড়ির ছাদে উঠে উদ্ধারের অপেক্ষায় দিন কাটাচ্ছেন।

গত এক সপ্তাহে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের ১০টি প্রদেশে ভয়াবহ বৃষ্টিপাত হয়েছে। বন্যায় এখন পর্যন্ত ২০ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও মাত্র ১৩ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। রয়টার্স জানায়, বিপুলসংখ্যক মানুষ এখনো পানিবন্দি এবং সহায়তার বাইরে রয়েছেন।

দুর্যোগ মোকাবিলায় থাই সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, খাদ্য, পানি ও জরুরি ত্রাণসামগ্রী নিয়ে একটি বিমানবাহী রণতরী এবং ১৪টি নৌযানের বহর পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি স্থাপন করা হবে মোবাইল রান্নাঘর, যা প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার মানুষের খাবার সরবরাহে সক্ষম। নৌবাহিনী জানায়, প্রয়োজনে মেডিকেল টিমের মাধ্যমে রণতরীটিকে একটি ‘ভাসমান হাসপাতালে’ রূপান্তর করা হবে। উদ্ধারকাজে নৌকা, হাই-ক্লিয়ারেন্স ট্রাক ও জেট স্কি ব্যবহার করা হচ্ছে। সংখলা প্রদেশের (যেখানে হাতইয়াই শহর অবস্থিত) গভর্নরের মতে, এসব যানবাহনের মাধ্যমে পানিবন্দি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।

মঙ্গলবার থাইল্যান্ডের মন্ত্রিসভা জরুরি তহবিল ছাড়ের লক্ষ্যে সংখলাকে দুর্যোগপূর্ণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা করেছে। তবে দুর্যোগের মধ্যে এখনো অসংখ্য মানুষ আটকা পড়ে আছেন। অবিরাম বৃষ্টিপাতে থাইল্যান্ডের প্রতিবেশী দেশগুলোও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভিয়েতনামে এক সপ্তাহে প্রাণহানি বেড়ে ৯৮ জনে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, মালয়েশিয়ায় ১৯ হাজারের বেশি মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। দেশটির উত্তর সীমান্তবর্তী এলাকায় ১২৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।