Image description

গত এক মাসে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে কুয়াশা ও বৈরী আবহাওয়ায় পথ হারিয়ে ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশের অভিযোগে কমপক্ষে ৮২ জন বাংলাদেশি জেলেকে আটক করেছে ভারতীয় কোস্ট গার্ড। এদের মধ্যে ভোলার লালমোহনের ১৩ জন এবং কক্সবাজারের কুতুবদিয়া ও বাঁশখালীর ৬৯ জন রয়েছেন। বেশিরভাগই এখন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি।

আটকের ঘটনাগুলো— ১০ নভেম্বর – লালমোহনের ১৩ জেলে, ১৯ নভেম্বর – কুতুবদিয়ার ২৮ জেলে (ট্রলার কৈয়ারবিল), ১৯ নভেম্বর – কুতুবদিয়া ও বাঁশখালীর ২৬ জেলে (ট্রলার এমভি মায়ের দোয়া) ও ৩০ নভেম্বর – কুতুবদিয়ার ১৫ জেলে (ট্রলার এমবি আল্লাহ মালিক)।

ভারতীয় গণমাধ্যম ‘দি হিন্দু’ জানায়, ৩০ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের ফ্রেজারগঞ্জ উপকূলে অভিযান চালিয়ে ১৫ জনকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশের’ অভিযোগে আটক করা হয়। তাদের ফ্রেজারগঞ্জ থানায় হস্তান্তরের পর আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

২১ দিন নিখোঁজ থাকার পর গত সোমবার লালমোহনের ১৩ জেলে ভারতের কারাগার থেকে ভিডিও কল ও ইমুতে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। কুতুবদিয়ার কয়েকজন জেলেও কোস্ট গার্ডের মোবাইল থেকে ফোন করে আটকের খবর জানিয়েছেন। জীবিত থাকার সংবাদে পরিবারে স্বস্তি ফিরলেও দ্রুত ফিরিয়ে আনার দাবি জোরালো হয়েছে।

শিপংকর দাশের মা নয়ন রানী দাশ বলেন, “সে আমাদের ছয়জনকে সামলাত… জানি না কবে ছেলের মুখ দেখতে পাব।”  

বেণু বাঁশি জলদাশের স্ত্রী বিপু রানী বলেন, “স্বামী ছাড়া ঘরটা অন্ধকার।”  

এনামুল হকের বাবা মোহাম্মদ রফিক বলেন, “সরকার চাইলে তাদের ফেরাতে পারে।”

প্রশাসনের তৎপরতা জোরদার হয়েছে। কুতুবদিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ক্যথোয়াইপ্রু মারমা জানান, আটকদের পরিচয় নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নথি সংগ্রহ করা হয়েছে, প্রক্রিয়া এগিয়ে চলছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান বলেন, বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে, সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে।

চলতি বছরের ২ জানুয়ারি ভারত ৯০ জন বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত দিয়েছিল, একই দিন বাংলাদেশ ৯৫ জন ভারতীয় জেলেকে ফেরত দেয়। জেলেপল্লীর বাসিন্দারা আশা করছেন, দুই দেশের প্রশাসনিক ও কোস্ট গার্ড পর্যায়ের আলোচনার মাধ্যমে শিগগিরই তাদের স্বজনরা দেশে ফিরবেন।