Image description

শীতের বাজারে গেলেই এখন চোখে পড়ে তাজা লাল ও কমলা রঙের গাজর। কেবল সালাদ কিংবা হালুয়াতেই নয়, পুষ্টিবিদদের মতে গাজর হলো একটি ‘সুপারফুড’। প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর এই সবজিটি শীতকালীন নানা রোগবালাই থেকে আমাদের শরীরকে রক্ষা করে। গাজর খাওয়ার জাদুকরী কিছু উপকারিতা নিয়েই আজকের এই আয়োজন।

চোখের জ্যোতি বাড়াতে অনন্য
গাজরে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন থাকে, যা আমাদের শরীরে গিয়ে ভিটামিন-এ তে রূপান্তরিত হয়। এটি চোখের রেটিনাকে ভালো রাখে এবং রাতকানা রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার বা মোবাইলের স্ক্রিনে তাকিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের জন্য গাজর অত্যন্ত উপকারী।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
শীতকালে সর্দি-কাশি বা ফ্লু হওয়া খুব সাধারণ বিষয়। গাজরে থাকা ভিটামিন-সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এটি শরীরকে ক্ষতিকর জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।

উজ্জ্বল ও সজীব ত্বক
শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বক প্রাণহীন হয়ে পড়ে। গাজরে থাকা ভিটামিন-এ এবং বিটা-ক্যারোটিন ত্বককে ভেতর থেকে আর্দ্র রাখে। এটি ত্বকের বলিরেখা দূর করে এবং প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। নিয়মিত গাজর খেলে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকেও ত্বক রক্ষা পায়।

হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা
গাজরে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে বিদ্যমান আলফা-ক্যারোটিন ও লুটেইন হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। গাজরের ফাইবার শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে বিশেষভাবে কার্যকর।

হজমশক্তি বৃদ্ধি ও ওজন নিয়ন্ত্রণ
গাজর একটি উচ্চ আঁশযুক্ত সবজি। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে। যারা ওজন কমাতে চান, তারা গাজরকে নিয়মিত ডায়েটে রাখতে পারেন। কারণ এটি খেলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা থাকে, ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে।

লিভারের টক্সিন দূর করতে
শরীরের দূষিত পদার্থ বা টক্সিন বের করে দিতে গাজরের জুড়ি নেই। এটি লিভার পরিষ্কার রাখতে এবং পিত্তরসের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।

কীভাবে খাবেন?
পুষ্টিবিদদের মতে, গাজর কাঁচা খেলে সবচাইতে বেশি ফাইবার পাওয়া যায়। তবে সামান্য অলিভ অয়েল দিয়ে হালকা রান্না করে খেলে এর বিটা-ক্যারোটিন শরীর খুব সহজে গ্রহণ করতে পারে। এছাড়া নিয়মিত এক গ্লাস গাজরের রস বা সালাদ আপনার স্বাস্থ্যের ভোল বদলে দিতে পারে।

যেকোনো খাবারই অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়। গাজরে প্রচুর পরিমাণে সুগার ও বিটা-ক্যারোটিন থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।

প্রকৃতির এই অসাধারণ দান গাজরকে শীতের মৌসুমে অবহেলা না করে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় যোগ করুন। সুস্থ থাকতে এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ধরে রাখতে গাজরের বিকল্প খুব কমই আছে।