মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ আইরিন খান বলেছেন, জনরোষকে সাংবাদিক ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যেকোনো সময়ই বিপজ্জনক। বাংলাদেশ যখন নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে, তখন এমন হওয়াটা আরো বেশি উদ্বেগের। এর পরিণতি গণতন্ত্রের জন্য গুরুতর হতে পারে।
দ্য ডেইলি স্টার ও প্রথম আলো কার্যালয়ে হামলার নিন্দা জানতে গিয়ে আইরিন খান এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরের ওয়েবসাইটে। আইরিন খান সংস্থাটির মতামত ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার।
আইরিন খান বলেছেন, ডেইলি স্টার, প্রথম আলো ও ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে আগুন দেওয়া, ভাঙচুর এবং নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে দেশজুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হওয়ার প্রেক্ষাপটে। এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম নেতা শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে। যিনি জনসম্মুখে গুলিতে নিহত হন।
জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ বলেন, একজন অনুপ্রেরণাদায়ী নেতাকে হত্যা এবং তাঁকে মৃত ঘোষণার পর সাংবাদিক ও শিল্পীদের বিরুদ্ধে সংগঠিত সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাই। গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনার দ্রুত ও কার্যকর তদন্ত করে দোষীদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
আইরিন খান আরো বলেন, এই হামলাগুলো হঠাৎ করে সৃষ্টি হয়নি। দায়মুক্তির সংস্কৃতি মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা এবং গণমাধ্যম ও শিল্পের স্বাধীনতা রক্ষায় পদক্ষেপ না নেওয়ার পরিণতি এটি। গত এক বছরে বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি উভয়পক্ষের কাছে থেকে (অনলাইন ও অফলাইন) উল্লেখযোগ্য চাপের মুখে পড়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত শতাধিক সাংবাদিককে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও সন্দেহভাজন হিসেবে খুন, সন্ত্রাসবাদসহ অন্যান্য গুরুতর অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার মূলত আগের মতোই দায়মুক্তির ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। ফলে হামলা ও হুমকি কার্যত স্বাভাবিকে পরিণত হয়েছে।




Comments