ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পিটিয়ে হত্যা করা পোশাকশ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তারাকান্দার বানিহালা ইউনিয়নের মোকামিয়াকান্দা গ্রামে নিহতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার।
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘দিপু হত্যা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। এ ঘটনায় কোনো অজুহাতই গ্রহণযোগ্য নয়।’ তিনি আরও বলেন, দিপুর স্ত্রী, সন্তান ও পুরো পরিবারের আর্থিক ও আইনিসহ সকল দায়ভার রাষ্ট্র গ্রহণ করবে।
শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার বলেন, ‘একটি দুষ্কৃতকারী গোষ্ঠী বিভাজন সৃষ্টি করে এসব উসকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে কোনো চাপের কাছে সরকার নতিস্বীকার করবে না। বাইরের কোনো উসকানি বা এসব অপকর্ম নির্বাচনে কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না।’
ইতিমধ্যেই এ ঘটনায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা আশ্বাস দেন যে, তদন্তের মাধ্যমে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
উপদেষ্টার সফরের আগে দুপুরে নাগরিক কোয়ালিশনের ব্যানারে ১৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দিপুর বাড়িতে পৌঁছায়। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী ও মানবাধিকার কর্মী শহিদুল আলমের নেতৃত্বে এ দলে ছিলেন নৃবিজ্ঞানী রেহনুমা আহমেদ, জাকির হোসেন ও দীপায়ন খীসা প্রমুখ।
শহিদুল আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা বৈষম্যহীন যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেখানে বিনা প্রমাণে একজনকে হত্যা করে মরদেহ পোড়ানো হবে-তা কাম্য নয়। মব-সহিংসতার ঘটনায় রাষ্ট্র ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবহেলা আজ দৃশ্যমান।’
গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে ভালুকার জামিরদিয়া এলাকায় পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস (বিডি) লিমিটেড কারখানায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে দিপুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ গাছে ঝুলিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই অপু দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ১৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।




Comments