১৪ বছর পর কলকাতায় পা রেখেছিলেন ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি। আর্জেন্টাইন কিংবদন্তির তিন দিনের সফর ঘিরে উৎসবের আমেজ ছিল তিলোত্তমাজুড়ে। কিন্তু শনিবার সকালে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সেই উৎসবের আমেজ মুহূর্তেই পরিণত হলো ক্ষোভ আর বিশৃঙ্খলায়। চড়া দামে টিকিট কেটেও প্রিয় তারকাকে দেখতে না পাওয়ার হতাশায় স্টেডিয়ামে ব্যাপক ভাঙচুর চালালেন ক্ষুব্ধ সমর্থকরা।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ লুইস সুয়ারেজ ও রদ্রিগো ডি পলকে সঙ্গে নিয়ে সল্টলেকের যুবভারতী স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন মেসি। গ্যালারিতে তখন গগনবিদারী চিৎকার। কিন্তু এই উচ্ছ্বাস বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, মেসি গাড়ি থেকে নামামাত্রই তাঁকে ঘিরে ধরেন রাজনীতিবিদ, আমলা ও আয়োজক কমিটির সদস্যরা। সেলফি ও অটোগ্রাফের ভিড়ে গ্যালারি থেকে মেসিকে কার্যত দেখাই যাচ্ছিল না।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আয়োজকরা বারবার মাইকে ভিড় সরানোর অনুরোধ জানালেও তাতে কর্ণপাত করেননি ভিআইপিরা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মাত্র ২০ মিনিট পরেই, অর্থাৎ সকাল ১১টা ৫০ মিনিট নাগাদ মাঠ থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় মেসিকে।
হাজার হাজার টাকা খরচ করে টিকিট কেটেও প্রিয় তারকাকে একঝলক দেখতে না পেয়ে ধৈর্য হারান সাধারণ সমর্থকরা। শুরু হয় ‘উই ওয়ান্ট মেসি’ স্লোগান। একপর্যায়ে ক্ষোভের বশে স্টেডিয়ামে ভাঙচুর শুরু করেন তারা। চেয়ার ভাঙা, মাঠে বোতল ও ব্যানার ছুড়ে ফেলা এবং নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়ার মতো ঘটনায় স্টেডিয়াম চত্বর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে নিরাপত্তা রক্ষীরা লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হন।
ইন্ডিয়া টুডে-সহ একাধিক ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সমর্থকদের এই ক্ষোভ মেসির প্রতি ছিল না, ছিল মূলত আয়োজকদের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে। এক ক্ষুব্ধ সমর্থক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা ১২ হাজার রুপি দিয়ে টিকিট কেটেছি, অথচ মেসির মুখটাই ঠিকমতো দেখতে পাইনি। মেসির চারপাশে শুধু নেতা ও অভিনেতারাই ছিলেন। সাধারণ দর্শকদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।’
মেসির এই সফরে সাধারণ দর্শকদের চেয়ে সেলিব্রেটি ও প্রভাবশালীদের আধিপত্য বেশি ছিল এমন অভিযোগে এখন উত্তাল কলকাতার ফুটবল আঙিনা।




Comments