
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওরাকজাই জেলায় সেনাবাহিনীর অভিযানে অন্তত ৩০ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। সাম্প্রতিক এক সশস্ত্র হামলায় সেনাবাহিনীর ১১ সদস্য নিহত হওয়ার পর প্রতিশোধমূলক এই অভিযান চালানো হয় বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) জিও নিউজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণমাধ্যম শাখা আইএসপিআর জানিয়েছে, নিহত সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুনায়েদ তারিক ও মেজর তায়্যাব রাহাত ছিলেন। তারা একটি গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক অভিযান (আইবিও) চলাকালে প্রাণ হারান।
আইএসপিআর দাবি করেছে, অভিযানে ‘বিদেশি সমর্থনপ্রাপ্ত’ জঙ্গিগোষ্ঠী ফিতনা আল-খাওয়ারিজ-এর সদস্যদের লক্ষ্য করা হয়েছিল।
বুধবার প্রকাশিত সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, ৭ ও ৮ অক্টোবরের মধ্যরাতে ওরাকজাই জেলায় এ অভিযান পরিচালিত হয়। এতে ১৯ জন জঙ্গি নিহত হয়। এর কয়েক ঘণ্টা আগে খাইবার পাখতুনখোয়ার দেরা ইসমাইল খান জেলায় আরেক অভিযানে সাতজন সন্দেহভাজন জঙ্গি নিহত হয়। সেই অভিযানে নেতৃত্বদানকারী মেজর সিবতাইন হায়দারও প্রাণ হারান। ৩০ বছর বয়সী এই কর্মকর্তা কোয়েটা জেলার বাসিন্দা ছিলেন।
সম্প্রতি সেনা সদর দপ্তরের ২৭২তম কর্পস কমান্ডার্স সম্মেলনে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ‘বিদেশি সমর্থনে পরিচালিত সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক’ ধ্বংসের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
অন্যদিকে, ইসলামাবাদভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (সিআরএসএস)-এর সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে পাকিস্তানে সামগ্রিক সহিংসতা বেড়েছে প্রায় ৪৬ শতাংশ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ সময়ে দেশজুড়ে অন্তত ৩২৯টি সহিংস ঘটনার মধ্যে ৯০১ জন নিহত ও ৫৯৯ জন আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রয়েছে বেসামরিক নাগরিক, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা।
সহিংসতার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে আফগান সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে, যা দেশের মোট সহিংস ঘটনার প্রায় ৯৬ শতাংশের জন্য দায়ী। শুধুমাত্র খাইবার পাখতুনখোয়াতেই নিহত হয়েছে প্রায় ৬৭০ জন, যা মোট সহিংসতার প্রায় ৭০ শতাংশ।
বিশ্লেষকদের মতে, আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকায় জঙ্গি তৎপরতা ও অভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীলতা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে।
Comments