শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান সম্পূর্ণভাবে তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত: এস জয়শঙ্কর
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান সম্পূর্ণভাবে তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, “যে পরিস্থিতিতে তিনি ভারতে এসেছেন, সেই বাস্তবতাই তাঁর এই সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে।” শনিবার (৬ ডিসেম্বর) নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত এইচটি লিডারশিপ সামিটে এনডিটিভির সিইও ও এডিটর-ইন-চিফ রাহুল কানওয়ালের সঙ্গে এক আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
শেখ হাসিনা কী যতদিন ইচ্ছা ভারতে থাকতে পারবেন? এমন প্রশ্নে জয়শঙ্কর বলেন, এ বিষয়ে ভারত সরকারের কোনো আলাদা মতামত বা প্রভাব নেই; বিষয়টি পুরোপুরি শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত পরিস্থিতি ও সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল।
শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান নিয়ে বক্তব্যের পর ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্কের বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়েও মন্তব্য করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ভারত সবসময়ই প্রতিবেশী বাংলাদেশে একটি “বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া” নিশ্চিত হতে দেখতে চায়।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, “আমরা শুনেছি, বাংলাদেশের মানুষ—বিশেষ করে বর্তমান শাসকগোষ্ঠী—অভিযোগ করছে যে আগের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সমস্যা ছিল। যদি নির্বাচন নিয়েই আপত্তি থাকে, তাহলে প্রথম কাজ হওয়া উচিত একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা।”
জয়শঙ্কর বলেন, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের স্বার্থে বাংলাদেশে শক্তিশালী গণতান্ত্রিক কাঠামো ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন এখন সময়ের দাবি।
প্রতিবেশীর প্রতি ভারতের গণতান্ত্রিক অগ্রাধিকারের ওপর জোর দিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করি। ভারত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে সব সময় চায় প্রতিবেশী দেশেও জনগণের প্রকৃত মতামত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হোক।’
বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জয়শঙ্কর। বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের মঙ্গল কামনা করি। আমি নিশ্চিত, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া থেকে যে সরকারই আসুক না কেন, তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়ে ভারসাম্যপূর্ণ ও পরিপক্ব দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে এবং আশা করি পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’
গত বছরের আগস্ট মাসে বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থানের সময় ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। শত শত মানুষের প্রাণহানি ও হাজার হাজার মানুষ আহত হওয়ার পর তার টানা ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। এরই প্রেক্ষিতে মানবতাবিরোধী অপরাধে গত মাসে ৭৮ বছর বয়সী শেখ হাসিনাকে তার অনুপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।




Comments