Image description

রাজধানীর পুরানা পল্টনে আততায়ীর গুলিতে গুরুতর আহত ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও তরুণ রাজনীতিক শরিফ ওসমান হাদি আর নেই। সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪৪ মিনিটে ওসমান হাদির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। সেখানে লেখা হয়, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে আল্লাহ শহিদ হিসেবে কবুল করেছেন।’ পরে ইনকিলাব মঞ্চের অফিশিয়াল পেজ থেকেও তার প্রয়াণের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে এই বর্বরোচিত হামলার শিকার হন তিনি। আসন্ন নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন এবং সেদিন নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিচ্ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, চলন্ত রিকশায় থাকা অবস্থায় একটি মোটরসাইকেলে আসা দুই দুর্বৃত্ত খুব কাছ থেকে তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়। গুলিটি হাদির মাথার ডান দিক দিয়ে ঢুকে বাম পাশ দিয়ে বেরিয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, বুলেটের কিছু অংশ তার মস্তিষ্কের ভেতরে রয়ে গিয়েছিল।

ঢাকা মেডিকেলে প্রাথমিক অস্ত্রোপচারের পর পরিবারের সিদ্ধান্তে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার অবস্থা ‘অত্যন্ত আশঙ্কাজনক’ থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। গত তিন দিন সেখানে নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকার পর অবশেষে আজ রাতে তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।

শরিফ ওসমান হাদি জুলাই অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া অন্যতম একজন সংগঠক ছিলেন। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলনে তিনি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে আসছিলেন।

তার এই অকাল প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ছাত্র-জনতা ও রাজনৈতিক অঙ্গনে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছেন। তার মরদেহ কবে দেশে আনা হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।